

নিউ ইয়র্ক সিটির নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত জোহরান মামদানি (Zohran Mamdani)। আর নিজের বিজয়ী ভাষণে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে স্মরণ করলেন তিনি।
মেয়র নির্বাচিত হবার পর নিউ ইয়র্কের মানুষের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন মামদানি। যেখানে জওহরলাল নেহেরুর ঐতিহাসিক 'ট্রাইস্ট উইথ ডেস্টিনি'র (Tryst with Destiny) আদলে তিনি বক্তব্য রাখেন। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার প্রাক্কালে জওহরলাল নেহেরুর ভাষণের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, "আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে এখন আমার জওহরলাল নেহেরুর কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। ইতিহাসে এমন কিছু মুহূর্ত আসে, যখন আমরা পুরোনো থেকে নতুনের দিকে পা রাখি। যখন একটি যুগ শেষ হয় এবং দীর্ঘদিন ধরে চাপা পড়ে থাকা কোনও জাতির আত্মা কিছু বলতে পারে। এখন আমরা পুরোনো থেকে নতুনের দিকে পা রেখেছি"।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির তোয়াক্কা না করেই ৪ নভেম্বরের ভোটে নিউ ইয়র্কের মানুষ মেয়র পদে নির্বাচিত করেছেন ৩৪ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানিকে। তিনিই নিউ ইয়র্ক সিটির সর্বকনিষ্ঠ মেয়র হতে চলেছেন। জয়ের পথে তিনি পরাজিত করেছেন নিউ ইয়র্কের স্টেট গভর্নর, নির্দল প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুওমোকে। নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস সিলওয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার দৌড়ে থাকলেও পরে তিনি নাম প্রত্যাহার করে নেন।
এবারের মেয়র নির্বাচনে ইসলাম বিদ্বেষ এবং বর্ণবিদ্বেষে ভরা বিরোধী প্রচারের সামনে, মামদানি উর্দু, হিন্দি এবং স্প্যানিশ ভাষায় প্রচার চালিয়েছিলেন। নিউ ইয়র্কের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভোটারদের কাছে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশীয় প্রবাসীদের কাছে পৌঁছাতে তাঁর এই কৌশল বিশেষ কাজে লেগেছে। তাঁর মুসলিম ধর্ম গ্রহণ, গাজা এবং প্যালেস্তিনীয় অধিকারের পক্ষে তাঁর সমর্থন এবং অভিবাসীদের পক্ষে তাঁর দৃঢ় অবস্থান তাঁকে মেয়রের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে দেয়।
মাত্র একবছর আগেও রাজনৈতিক মহলে সেভাবে পরিচিত ছিলেন না জোহরান মামদানি। যদিও এই মুহূর্তে ভোটে জিতে তিনিই নিউ ইয়র্কের মেয়র। রাজনৈতিক মহলে যার পরিচয় ডেমোক্রেটিক সোস্যালিস্ট হিসেবেই। যদিও প্রচার পর্বে মামদানিকে ‘কমিউনিস্ট’ বলে উল্লেখ করে তাঁকে ভোট না দেবার আহ্বান জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মেয়র নির্বাচনে মামদানি পেয়েছেন ১০ লক্ষ ৩৬ হাজার ৫১ ভোট এবং তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কুয়োমো পেয়েছেন ৮ লস্খ ৫৪ হাজার ৯৯৫ ভোট। নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিলেও ব্যালটে নাম থেকে যাওয়ায় রিপাবলিকান প্রার্থী সিলভা পেয়েছেন ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ১৩৭ ভোট।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন