
দ্রুত বদলে যাচ্ছে বিশ্ব রাজনীতির সমীকরণ। ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘর্ষ নিয়ে ক্রমশই দূরত্ব বাড়ছে ইউরোপের সঙ্গে আমেরিকার। সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে নতুন করে আর্থিক সাহায্য করতে নারাজ। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য যে বিশাল অঙ্কের ডলার খরচ করতে হচ্ছে আমেরিকাকে তা নিয়ে বেজায় অসন্তুষ্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
একদিকে ইউরোপের সব দেশ, যারা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। অন্যদিকে ট্রাম্প, যিনি চাইছেন যে কোনও মূল্যে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি। সম্প্রতি, এই বিষয় নিয়ে রাশিয়া ও আমেরিকার প্রতিনিধিদল প্রাথমিকভাবে সৌদি আরবে বৈঠকে বসেছিলেন।
যদিও সেই বৈঠকে আমন্ত্রণ পাননি ইউক্রেনের কোনও প্রতিনিধি। আর এতেই বেজায় চটেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন – “আমরা চাই কেউ আমাদের পেছনে কোনো সিদ্ধান্ত না দিক। ইউক্রেনের যুদ্ধ কীভাবে শেষ করা যায় সে বিষয়ে ইউক্রেনকে ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।”
এরপর থেকে ক্রমশই তলানি ঠেকেছে ইউক্রেন-আমেরিকা সম্পর্ক। ট্রাম্প রীতিমতো জেলেনস্কিকেই দায়ী করেছেন রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করার জন্য। তিনি বলেন – “ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু করাই ঠিক হয়নি। তিন বছর আগেই তাঁরা চুক্তি করতে পারতো রাশিয়ার সঙ্গে।”
শুধু এখানেই থেমে থাকেননি ট্রাম্প। জেলেনস্কিকে ‘নির্বাচন ছাড়াই একজন স্বৈরশাসক’ বলে কটাক্ষ করেছেন। দ্রুত নির্বাচন না করলে ইউক্রেনের অবশিষ্ট বলে কিছু থাকবে না বলেও হুমকি দিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালেই জেলেনস্কির মেয়াদ শেষ হয়েছে।
ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়াতে লাগাতার জেলেনস্কিকে আক্রমণ করে চলেছেন। তিনি লিখেছেন – “চিন্তা করুন, একজন বিনয়ী সফল কৌতুকাভিনেতা (ভ্লাদিমির জেলেনস্কি) আমেরিকাকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে বলছেন। এমন একটি যুদ্ধের জন্য, যা জেতা সম্ভব নয়। এমন একটি যুদ্ধ, যা তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ‘ট্রাম্প’ ছাড়া কখনও থামাতে পারবেন না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের চেয়ে ২০০ বিলিয়ন ডলার বেশি ব্যয় করেছে। বিনিময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিছুই ফেরত পাবে না।”
ট্রাম্পের অভিযোগ – ইউক্রেনকে আমেরিকা যত আর্থিক সাহায্য করেছে, তার অর্ধেকেরই কোনও হিসাব নেই। জেলেনস্কি নিজেও তা স্বীকার করেছেন। অথচ মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও তিনি দেশে নির্বাচন করতে চাইছেন না।
জেলেনস্কির পাশাপাশি ট্রাম্পের নিশানায় পূর্বতন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। ট্রাম্প লিখেছেন – “আমরা রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের অবসানের জন্য সফলভাবে আলোচনা করছি। বাইডেন কখনও চেষ্টা করেননি। ইউরোপ শান্তি আনতে ব্যর্থ হয়েছে বাইডেন। আমি ইউক্রেনকে ভালোবাসি, কিন্তু জেলেনস্কি এক ভয়াবহ কাজ করছেন। তাঁর দেশ ভেঙে পড়েছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ অপ্রয়োজনীয়ভাবে মারা যাচ্ছে। এটা চলতেই থাকছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন