

শ্রীলঙ্কাতে ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বিদ্যুৎ প্রকল্প প্রত্যাহার করতে বাধ্য হল আদানি গ্রিন এনার্জি। স্থানীয়দের তীব্র বিক্ষোভ এবং পূর্ববর্তী সরকারের অধীনে চুক্তির স্বচ্ছতা নিয়ে ক্রমবর্ধমান তদন্তের ফলে বায়ু শক্তি এবং দুটি ট্রান্সমিশন প্রকল্প প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদানি গোষ্ঠী।
বৃহস্পতিবার আদানি গ্রুপের এক মুখপাত্র জানান, "আমাদের বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমরা শ্রীলঙ্কায় বায়ু শক্তি ও ট্রান্সমিশন প্রকল্প থেকে সম্মানের সাথে সরে আসছি। তবে, শ্রীলঙ্কার প্রতি আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ভবিষ্যতে সরকার সহযোগিতা করলে আবার প্রকল্পের কাজ হবে।''
আদানি গ্রুপের এই প্রকল্প নিয়ে প্রথম থেকেই বিরোধিতা হয়েছিল। শ্রীলঙ্কার পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলের নেতারা বিরোধিতা করেছিলেন। ২০২৪ সালের মে মাসে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহের অধীনে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। চুক্তি অনুযায়ী মান্নার এবং পুনেরিনের উপকূলীয় অঞ্চলে বায়ু শক্তির মাধ্যমে ৪৮৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
শ্রীলঙ্কার নতুন সরকার চুক্তির শর্ত পর্যালোচনা করতে গিয়ে দেখে, ৪৮৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত বিদ্যুতের ক্রয়মূল্য (০.০৮২৬ মার্কিন ডলার প্রতি কিলোওয়াট-ঘণ্টা) স্থানীয় সংস্থাগুলির থেকে তুলনায় বেশি। যা লাভজনক নয়, এককথায় ক্ষতি। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আদানি গ্রুপকে এই মূল্য কমানোর জন্য চাপ দিতে থাকে।
প্রসঙ্গত, এই প্রকল্প বাতিল হওয়ায় শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে আরও সুবিধা হল নতুন রাষ্ট্রপতি তথা বামপন্থী নেতা অনুরা কুমার দিসানায়েকের। কারণ নির্বাচনী প্রচারে তিনি এই প্রকল্প বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ বিভাগের ভবিষ্যৎ নীতিতে এই সিদ্ধান্ত বড় ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে এটি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বার্তা যে, নতুন সরকার আরও স্বচ্ছ চুক্তির পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে।
বায়ু শক্তি প্রকল্প বাতিল হলেও আদানি গ্রুপ শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে। কলম্বো বন্দরের ওয়েস্ট কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে তাদের কাজ চলছে। যা শ্রীলঙ্কার সমুদ্র বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন