
নয়াদিল্লী এবং কলকাতা থেকে আওয়ামী লীগের (Awami League) কাজ চালাচ্ছেন বাংলাদেশের পলাতক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sk Hasina)। বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী মহম্মদ ইউনুস (Md Yunus) সরকারের এই অভিযোগ অস্বীকার করলো ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রক (Ministry of External Affairs - MEA)। এর আগে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল যে, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ দিল্লি এবং কলকাতায় অফিস করেছে এবং সেখান থেকে দলের কাজ পরিচালনা করছে।
বুধবার বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল (Randhir Jaiswal) এক বিবৃতিতে জানান, বাংলাদেশের মহম্মদ ইউনুস-এর নেতৃত্বাধীন কার্যনির্বাহী সরকারের এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি আরও জানান, ভারত কোনও বিদেশী রাজনৈতিক দলকে নিজেদের দেশের মাটি থেকে কাজ পরিচালনা করার অনুমতি দেয়না।
ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দেওয়া ওই বিবৃতিতে রণধীর জয়সোয়াল জানিয়েছেন, “ভারত সরকার ভারতে আওয়ামী লীগের সদস্যদের দ্বারা বাংলাদেশ বিরোধী কোনও কার্যকলাপ বা ভারতীয় আইনের পরিপন্থী কোনও কার্যকলাপের বিষয়ে অবগত নয়। সরকার ভারতের মাটি থেকে অন্য দেশের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কার্যকলাপ পরিচালনার অনুমতি দেয় না। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেস বিবৃতিটি তাই ভুল।
ভারত তার প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করে যে জনগণের ইচ্ছা এবং জনাদেশ নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অবাধ, সুষ্ঠু এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”
প্রসঙ্গত, গত বছরের আগস্ট মাসে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হবার পর ভারতে স্ব-নির্বাসনে আছেন।
২০ আগস্ট ঢাকার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ দিল্লি এবং কলকাতায় অফিস করে দলের কাজকর্ম চালাচ্ছে এবং ভারত সরকার যেন সেইসব অফিস বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশে বিভিন্ন ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্ত একাধিক বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং তাঁরা এনজিও-র আড়ালে ভারত থেকে আওয়ামী লীগের কাজ পরিচালনা করছেন।
সুনির্দিষ্ট ভাবে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক (Ministry of Foreign Affairs) জানায়, চলতি বছরের ২১ জুলাই দিল্লিতে প্রেস ক্লাবে ওই তাঁরা সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলেন এবং পুস্তিকা বিতরণ করেন।
বাংলাদেশ সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের মতে, ভারতের মাটি থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্বারা বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে পরিচালিত যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে এক নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের পলাতক নেতা-কর্মীদের দ্বারা আইনত বা অবৈধভাবে কার্যালয় স্থাপন, বাংলাদেশ এবং এ দেশের জনগণের প্রতি সুস্পষ্ট অবমাননার শামিল।
ভারত সরকার যদিও বাংলাদেশ সরকারের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে এই বিষয়ে স্পষ্ট করে জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের সদস্যদের দ্বারা ভারত থেকে কোনও বাংলাদেশ বিরোধী কার্যকলাপ বা ভারতীয় আইন লঙ্ঘনকারী কোনও কার্যকলাপের বিষয়ে তারা অবগত নয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন