* মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল আমেরিকা।
* আমেরিকা জুড়ে নো কিংস বিক্ষোভ।
* ৫০ রাজ্যের ২৭০০ অঞ্চলে শনিবার বিক্ষোভে শামিল ৭০ লক্ষ মানুষ।
* বিক্ষোভকারীদের ব্যঙ্গ করে সামাজিক মাধ্যমে পোষ্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল আমেরিকা (USA)। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রায় সমস্ত রাজ্য এবং প্রধান প্রধান শহরে সাধারণ মানুষ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর বিরোধিতা করে ‘নো কিংস’ (No Kings) বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন। এই কর্মসূচির আয়োজকদের দাবি দেশের বিভিন্ন শহরে এখনও পর্যন্ত ৭০ লক্ষের বেশি মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
মার্কিন ক্যাপিটলের সামনে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্য করে প্রোগ্রেসিভ সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে গণতন্ত্রের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে জানিয়েছেন, "আমাদের এমন একজন রাষ্ট্রপতি আছেন যিনি নিজের হাতে এবং তার ঘনিষ্ঠ অভিজাত বন্ধুদের হাতে আরও বেশি ক্ষমতা চান।
“নো কিংস” বিক্ষোভের সংগঠকরা জানিয়েছেন শনিবার ৫০টি রাজ্যের ২৭০০ অঞ্চলে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। যেখানে প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা সরব হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে। এর আগে জুন মাসে “নো কিংস” বিক্ষোভের প্রথম দফায় অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ। উল্লেখযোগ্যভাবে এবারের বিক্ষোভে সমাজের বিভিন্ন অংশের, বিভিন্ন বয়সের মানুষকে অংশ নিতে দেখা গেছে। সেখানে ২০ বছর বয়সী যুবক থেকে ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধা সকলেই আছেন।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ওয়াশিংটন ডিসি, আটলান্টা, শিকাগো, সানফ্রান্সিসকো, লস এঞ্জেলস, বোস্টন, ফিলাডেলফিয়া, ডেনভার, সিয়াটেল, নিউ ইয়র্ক সিটিতে বড়ো সংখ্যায় মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। টাইমস স্কোয়ারে সাধারণ মানুষ আমেরিকার পতাকা হাতে “নো মোর ট্রাম্প” শ্লোগান তোলেন। আমেরিকা জুড়ে শহরে শহরে বিক্ষোভ হলেও এই বিক্ষোভ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ এবং কোথাও কোনও গ্রেপ্তারির ঘটনা ঘটেনি।
যদিও সাধারণ মানুষের এই বিক্ষোভকে রিপাবলিকান দলের পক্ষ থেকে “হেট আমেরিকা র্যালি” বলে অভিহিত করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিজস্ব রাজনৈতিক টিম এই বিক্ষোভকে ব্যঙ্গ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল করেছে। ডেকান হেরাল্ডের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এই বিক্ষোভের বিষয়ে হোয়াইট হাউসের প্রতিনিধি আবিগালি জ্যাকসনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি ইমেলে জানিয়েছেন, “কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে না”।
বিক্ষোভ প্রসঙ্গে ফক্স বিজনেস-এর প্রতিনিধিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা আমাকে রাজা বলে অভিহিত করছে। কিন্তু আমি কোনও রাজা নই। বিক্ষোভকারীদের ব্যঙ্গ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প সহ একাধিক রিপাবলিক্যান সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যঙ্গাত্মক এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও পোষ্ট করেছেন।
যার উত্তরে বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, আমরা জানি রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প) রাজা নন, কিন্তু আমরা আমাদের গণতন্ত্রকে স্বৈরতন্ত্রের দিকে যেতে দেখতে চাই না এবং বিক্ষোভের মূল উদ্দেশ্যই এটাই। বিভিন্ন অঞ্চলের বিক্ষোভে ডেমোক্রেট রাজনীতিকদের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার পরিধি প্রসারিত করেছেন। একাধিক বিষয়ে বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নরদের আপত্তি সত্ত্বেও তিনি এক্সিকিউটিভ অর্ডার ব্যবহার করে ফেডারেল সরকারের কিছু অংশ ভেঙে দিয়েছেন এবং মার্কিন শহরগুলিতে ন্যাশনাল গার্ড সৈন্য মোতায়েন করেছেন। ট্রাম্পের দাবি, সংকটে থাকা দেশ পুনর্গঠনের জন্য তাঁর পদক্ষেপগুলি প্রয়োজনীয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে স্বৈরশাসক বা ফ্যাসিবাদী আচরণের যে অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক নয়।
রয়টার্স-এর সাম্প্রতিক এক জনমত সমীক্ষায় দেখা গেছে ৪০ শতাংশ মানুষ ডোনাল্ড ট্রাম্পের কার্যকলাপকে সমর্থন জানিয়েছেন। অন্যদিকে ৫৮ শতাংশ মানুষ তাঁর সাম্প্রতিক কাজকর্মের বিরোধিতা করেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন