ইতালির চরম দক্ষিণপন্থী সরকারের প্রধানমন্ত্রী জিওর্জিয়া মেলোনির (Giorgia Meloni) বক্তব্যকে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে গ্রেটা থুনবার্গদের সমর্থনে দেশ জোড়া ধর্মঘটে অংশ নিল সে দেশের সাধারণ মানুষ। ইতালির প্রধানমন্ত্রী এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, “ফ্লোটিলা এক ভয়ংকর, অবিবেচক পদক্ষেপ”। গাজায় ত্রাণ দিতে যাবার অভিযানে ৪৪টি ছোটো জাহাজের যে নৌবহর যাচ্ছিল তাতে ইতালিরও বহু মানুষ আছেন। যে নৌবহর আটক করেছে ইজরায়েলি বাহিনী।
শুক্রবার সকাল থেকেই ইতালির বিভিন্ন বড়ো শহরে দলে দলে রাস্তায় নামেন সাধারণ মানুষ। ইজরায়েলি বাহিনীর হাতে ফ্লোটিলা আটক হবার প্রতিবাদে তাঁরা প্রতিবাদে শামিল হন। এদিনের ধর্মঘটের ডাক দেয় ইতালির বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন। যাদের মধ্যে প্রধান ভূমিকা নেয় ইটালিয়ান জেনারেল কনফেডারেশন অফ লেবার (CGIL) এবং Unione Sindacale di Base (USB)। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুসারে বৃহস্পতিবার কলেজিয়ামে প্রায় ১০ হাজার রাস্তায় নেমে এই ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল করেন।
সিজিআইএল-এর প্রধান মরিজিও ল্যান্ডিনি (Maurizio Landini) সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, "এই ধর্মঘট সেইসব সৎ মানুষদের ধর্মঘট, যারা গণহত্যা বন্ধ করতে চায়, যখন সরকার এবং রাষ্ট্রগুলো ভান করে যে তারা কিছু দেখেনি, যদিও তারাও এতে জড়িত।"
শুক্রবার সকাল থেকেই ধর্মঘটের রোমের রাস্তায় নামেন সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন শহরে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। ধর্মঘটের জেরে ব্যাহত হয়েছে বিমান চলাচল। ইতালিয়ান সংবাদসংস্থা এজিআই জানিয়েছে, এদিন ধর্মঘটের সমর্থনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ছাত্ররাও রাস্তায় নেমেছে। আনসা তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শুক্রবার ইতালিতে বন্ধ আছে অধিকাংশ স্কুল।
এদিন মিলানের রাস্তায় প্যালেস্তাইনের পতাকা নিয়ে মিছিল করেন বহু মানুষ। তাঁদের হাতে থাকা বিশাল ব্যানারে লেখা ছিল, “প্যালেস্তাইনকে মুক্ত কর, যুদ্ধ বন্ধ করো।”
ডেভডিস্কোরস তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সিজিআইএল-এর নেতৃত্বে ইতালির ১০০টির বেশি শহরে মিছিল হয়। রোমে ধর্মঘটীরা পিয়াজ্জা ভিট্টোরিও থেকে মেইন ট্রেন স্টেশন পর্যন্ত মিছিল করে।
এক বিক্ষোভকারী সংবাদসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, এটা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। আমাদের সরকার যা করছে, বিশ্বে যা হচ্ছে তা নিয়ে আমরা কতটা ক্ষুব্ধ তা এদিন মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে। আমরা ফ্লোটিলার প্রতি আমাদের সমর্থন জানাচ্ছি, সেই সঙ্গে প্যালেস্টাইনের প্রতিও সংহতি প্রকাশ করছি। বিশেষ করে গাজার মানুষদের জন্য, যাদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে, যাদের মেরে ফেলা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন