
মার্কিন (USA) হামলায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়নি ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রগুলি। বরং এই কর্মসূচি কিছু মাসের জন্য পিছিয়ে গেছে। মার্কিন গোয়েন্দাদের একটি গোপন রিপোর্টে এমনই দাবি করা হয়েছে।
‘নিউ ইয়র্ক টাইম্স’-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমেরিকার গোয়ান্দাদের একটি গোপন রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, মার্কিন হামলায় ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়নি। মার্কিন হামলায় ফোরডো, নাতানজ ও ইসফাহানে প্রবেশের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তবে বিমান হামলায় কেন্দ্রগুলির অভ্যন্তরে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, মার্কিন গোয়ান্দাদের রিপোর্ট বলছে মার্কিন হামলায় ৬ মাস পিছিয়ে যেতে পারে ইরানের পরমাণু গবেষণার কাজ। সেগুলি ধ্বংস হয়ে যায়নি। পাশাপাশি ইরান প্রায় ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম গোপনে অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে বলেও অনুমান গোয়েন্দাদের।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাঁচ পাতার ওই গোপন রিপোর্টটি শুধুমাত্র একটি প্রাথমিক মূল্যায়ন বলে ব্যাখ্যা করছেন গোয়েন্দা আধিকারিকেরা। আরও তথ্য সংগ্রহ করার পরে এই সংক্রান্ত বিষয়ে বিশদ জানা যাবে।
ইরান-ইজরায়েল সংঘাতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করার জন্য শনিবার রাতে হামলা চালায় মার্কিন সেনা। রবিবার সকালে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, আমরা ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। ফোরডোতে পরমাণু অস্ত্র তৈরি হচ্ছিল। আর হবে না। গোটা বিশ্বের কাছে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সবথেকে বড় আতঙ্ক।
যদিও এই গোপন প্রাথমিক রিপোর্টকে ভুয়ো বলে দাবি করেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে তিনি জানান, "এই রিপোর্ট সম্পূর্ণ ভুল। একদিকে এটিকে ‘টপ সিক্রেট’ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে, আর অন্যদিকে গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের একজন অজ্ঞাত, নিম্ন-স্তরের ব্যর্থ ব্যক্তি সিএনএন-এ এই তথ্য ফাঁস করে দিয়েছেন। এই ধরণের রিপোর্ট আসলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ছোটো করার জন্য করা হয়েছে। তাছাড়া ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করার জন্য নিখুঁতভাবে সম্পাদিত মিশন পরিচালনাকারী সাহসী যোদ্ধা পাইলটদের অসম্মান করার একটি স্পষ্ট প্রচেষ্টা। সবাই জানে ১৪টি ৩০,০০০ পাউন্ড বোমা লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে ফেলে দিলে কী হয়: সম্পূর্ণ ধ্বংস।"
অন্যদিকে এই রিপোর্টের পরও নিজের অবস্থানে অনড় ট্রাম্প। ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য এই মুহূর্তে নেদারল্যান্ডসে থাকা ট্রাম্প নিজের ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, “ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে হামলা ইতিহাসের সবচেয়ে সফল সামরিক হামলাগুলির মধ্যে একটি। ইরানের পরমাণু কেন্দ্রগুলি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে!”
সিএনএন এবং নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি লেখেন, "সিএনএন ব্যর্থ নিউ ইয়র্ক টাইমসের সাথে একত্রিত হয়ে ইতিহাসের অন্যতম সফল সামরিক হামলাকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে। ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে! টাইমস এবং সিএনএন উভয়ই জনসাধারণের দ্বারা নিন্দিত হচ্ছে!"