California: আমেরিকায় পুলিশের গুলিতে মৃত ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ! পরিবারের দাবি বৈষম্যের শিকার

People's Reporter: ভারতের তেলেঙ্গানার মেহেবুবনগরের বাসিন্দা মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন। ফ্লোরিডায় কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতকোত্তর করার পর সান্তা ক্লারার এক প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন।
মহম্মদ নিজামুদ্দিন
মহম্মদ নিজামুদ্দিনফাইল ছবি, নিউজ কর্ণাটক এক্স হ্যান্ডেল থেকে সংগৃহীত
Published on

আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারায় পুলিশের গুলিতে নিহত এক ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ। পুলিশ সূত্রে খবর, রুমমেটের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও পরিবারের তরফে অভিযোগ, বিষয়টির পেছনে রয়েছে বর্ণবিদ্বেষ ও বৈষম্য। পরিবারের অভিযোগ, ৩ সেপ্টেম্বর ঘটনাটি ঘটলেও পরিবারকে জানান হয়েছে ১৮ সেপ্টেম্বর।

নিহতের নাম মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন (৩০)। ভারতের তেলেঙ্গানার মেহেবুবনগরের বাসিন্দা তিনি। সান্তা ক্লারা পুলিশ বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৩ সেপ্টেম্বর জরুরি নম্বরে ফোন পেয়ে তাঁদের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে, নিজামুদ্দিন ছুরি হাতে তাঁর রুমমেটকে চেপে ধরেছেন। রুমমেট তখন একাধিক আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় ছিলেন।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে কর্মকর্তারা গুলি চালাতে বাধ্য হন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় নিজামুদ্দিনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত রুমমেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীনে।

ঘটনার দিন ওই ঘরে ঠিক কী হয়েছিল তা এখনও স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। যৌথভাবে এই ঘটনার তদন্ত করছে সান্তা ক্লারা কাউন্টি জেলা অ্যাটর্নির দফতর ও স্থানীয় পুলিশ। তারা জানিয়েছেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্ত মন্তব্য করা হবে না।

যদিও নিহতের পরিবারের দাবি, গুলি করার আগে পুলিশকে ফোন করেছিলেন নিজামুদ্দিনই। তাঁরা অভিযোগ তুলেছেন, এটি সরাসরি বর্ণবিদ্বেষজনিত নিপীড়নের পরিণতি। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আমেরিকায় পড়াশোনা ও চাকরির সময় থেকেই তিনি একাধিকবার বর্ণবাদ, কর্মস্থলে প্রতারণা এবং হয়রানির শিকার হয়েছেন।

নিজামুদ্দিন ফ্লোরিডায় কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতকোত্তর করার পর সান্তা ক্লারার একটি প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। শান্ত-প্রকৃতির ও ধার্মিক ব্যক্তি ছিলেন নিজামুদ্দিন। সম্প্রতি নিজের লিঙ্কডইন প্রোফাইলে তিনি লিখেছিলেন, “আমি বর্ণবিদ্বেষ, বৈষম্য, হয়রানি, মিথ্যা মামলার শিকার। যথেষ্ট হয়েছে, শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ শেষ হওয়া দরকার।”

এমনকি তিনি, খাবারে বিষ মেশানোর মতো গুরুতর অভিযোগও তুলেছিলেন। এছাড়া, একজন গোয়েন্দা দিয়ে তাঁর উপর নজরদারি চালানোরও অভিযোগ করেছিলেন তিনি।

পরিবারের পক্ষ থেকেও বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাঁদের দাবি, খাওয়ার মধ্যে বিষ মেশানো থেকে শুরু করে জোরপূর্বক উচ্ছেদ ও নজরদারির মতো অমানবিক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। তাঁদের বক্তব্য, এই প্রেক্ষাপটেই ঘটনার সঠিক তদন্ত হওয়া জরুরি। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছে পরিবার।

নিজামুদ্দিনের দেহ বর্তমানে সান্তা ক্লারার একটি হাসপাতালে রাখা আছে। পরিবার তাঁর মৃতদেহ ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের সাহায্য চেয়েছে।

এদিকে মজলিস বচাও তেহরিকের মুখপাত্র আমজেদ উল্লাহ খান জানিয়েছেন, তিনি নিহতের বাবার সঙ্গে দেখা করেছেন এবং ইতিমধ্যেই ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করকে চিঠি লিখে মার্কিন দূতাবাস ও সান ফ্রান্সিসকো কনসুলেটের মাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন ও মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে পদক্ষেপের অনুরোধ করেছেন।

যদিও এখনও পর্যন্ত ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

মহম্মদ নিজামুদ্দিন
আদানি সম্পর্কিত ১৩৮ ভিডিও, ৮৩ পোস্ট মুছে ফেলার নির্দেশ কেন্দ্রের! স্বাধীন সাংবাদিকতায় হস্তক্ষেপ?
মহম্মদ নিজামুদ্দিন
মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় বেকসুর খালাস হওয়া প্রজ্ঞা ঠাকুর সহ ৭ অভিযুক্তকেই নোটিশ বোম্বে হাইকোর্টের!

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in