

প্যালেস্টাইনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বিকৃতি এবং দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের বাস্তবায়নকে সমর্থনে রাষ্ট্রসংঘে ভোট দিল ভারত সহ মোট ১৪২টি দেশ। মাত্র ১০টি দেশ ফ্রান্সের আনা প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে।
ফ্রান্সের উদ্যোগে আনা এই প্রস্তাব শুক্রবার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় গৃহীত হয়। ১৪২ দেশ পক্ষে, ১০ দেশ বিপক্ষে এবং ১২ দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। ভারতের পাশাপাশি সব উপসাগরীয় আরব দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। অন্যদিকে ইজরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, আর্জেন্টিনা, হাঙ্গেরি, প্যারাগুয়ে এবং কিছু প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র এর বিরোধিতা করে।
গত জুলাই মাসে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ সভাপতিত্বে রাষ্ট্রসংঘের সদর দফতরে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এই ‘নিউ ইয়র্ক ডিক্লারেশন’ প্রথম উত্থাপিত হয়। এর লক্ষ্য ছিল দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থায় থাকা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়া নতুন করে জাগিয়ে তোলা।
সাত পৃষ্ঠার ওই ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, “গাজায় যুদ্ধ এখনই শেষ হতে হবে। ন্যায়সঙ্গত, টেকসই এবং স্থায়ী সমাধানের জন্য দ্বিরাষ্ট্র নীতি কার্যকর করা ছাড়া বিকল্প নেই।”
ঘোষণায় ৭ অক্টোবর হামাসের ইজরায়েল আক্রমণের নিন্দা জানানো হয়, যেখানে প্রায় ১,২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫০ জনের বেশি অপহৃত হয়। একই সঙ্গে ইজরায়েলের পাল্টা সামরিক অভিযানেরও সমালোচনা করা হয়, কারণ এতে ব্যাপক সংখ্যক বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি, পরিকাঠামো ধ্বংস ও মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।
ঘোষণায় ইজরায়েলকে একটি স্বাধীন ও কার্যকর প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি প্যালেস্টাইনবাসীর উপর সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। গাজা উপত্যকা প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ হবে বলেও ঘোষণায় জোর দেওয়া হয়।
তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। ইজরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওরেন মারমরস্টেইন এক বিবৃতিতে বলেন, “রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ আবারও প্রমাণ করল, এটি বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন একটি রাজনৈতিক নাট্যমঞ্চ। ঘোষণায় কোথাও হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি।”
যুক্তরাষ্ট্রও একই সুরে জানায়, এই প্রস্তাব আসলে “হামাসের জন্য উপহার” এবং রাজনৈতিক প্রদর্শন ছাড়া আর কিছু নয়। এই প্রসঙ্গে জেনে রাখা ভালো, আরব দেশগুলির বাইরে ভারতই প্রথম প্যালেস্টাইনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ফের একবার রাষ্ট্রসংঘে ভারত প্রমাণ করল তারা পূর্বের অবস্থানেই রয়েছে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন