
গাজায় চলমান সংঘাত থামাতে মাসের পর মাস ব্যর্থ চেষ্টার পর অবশেষে সমাধানের পথ খুলতে চলেছে। শুক্রবার হামাস জানিয়েছে, তারা ইজরায়েলের সঙ্গে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি মার্কিন-সমর্থিত প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা সিএনএন-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামাসের তরফ থেকে জানানো হয়, “হামাস মধ্যস্থতাকারীদের কাছে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জমা দিয়েছে এবং অবিলম্বে এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত তারা।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথায়, ইজরায়েল আগেই প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছিল। ফলে উভয় পক্ষ এখন বিস্তারিত চূড়ান্ত আলোচনায় বসতে চলেছে। আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে গাজা থেকে ইজরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা।
প্রস্তাব অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির সময় হামাস মোট ১০ জন জীবিত পণবন্দি ও ১৮ জন মৃতের দেহ ফিরিয়ে দেবে। প্রথম দিনেই আটজন জীবিত পণবন্দী মুক্তি পাবে এবং বিনিময়ে কিছু প্যালেস্টাইন বন্দী ছাড়া হবে। মুক্তির ঘটনায় হামাস কোনো ধরনের আনুষ্ঠান বা উদযাপন করবে না। সিএনএন-র প্রতিবেদ অনুযায়ী গাজায় ৫০ জন ইজরায়েলী পণবন্দি রয়েছেন।
এই প্রস্তাবের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র ইজরায়েলকে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আলোচনা রাখার ব্যাপারে জোরদার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পাশাপাশি ইজরায়েল গাজায় আন্তর্জাতিক চ্যানেলের মাধ্যমে মানবিক সহায়তা প্রদানে সম্মতি দিয়েছে।
এর আগে মার্কিন প্রসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, "ইজরায়েল যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। হামাস যদি এই প্রস্তাব না মানে তাহলে ফল ভালো হবে না। শুধু যুদ্ধবিরতি নয়, এই সময়ের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়ে আমরা আলোচনা করব।"
হামাস জানিয়েছে, তারা অভ্যন্তরীণ জাতীয় পরামর্শের মাধ্যমে একটি এমন চুক্তির লক্ষ্যে এগোচ্ছে, যা “আগ্রাসনের অবসান, ইজরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার এবং গাজাবাসীর জরুরি সহায়তা” নিশ্চিত করবে।
উল্লেখ্য, প্যালেস্টাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ৫৭,০০০ এরও বেশি প্যালেস্টাইনবাসীকে হত্যা করেছে ইজরায়েল। তবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইজরায়েলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। রবিবার ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, ইরানে ইজরায়েলের সামরিক অভিযানের পর "অনেক সুযোগ খুলে গেছে"। যার মধ্যে গাজায় আটকে থাকা পণবন্দিদের ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনাও অন্তর্ভুক্ত। সপ্তাহান্তে নেতানিয়াহুর ওয়াশিংটনে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে এবং সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সাথে দেখা করারও কথা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন