
গুয়ান্তানামো বে-তে ৩০ হাজার মানুষকে রাখার উপযোগী ডিটেনশন সেন্টার তৈরির নির্দেশ দিল ট্রাম্প প্রশাসন। এই বিষয়ে এক নির্দেশিকায় স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাধারণত সন্ত্রাসবাদী অথবা কুখ্যাত অপরাধীদের আটক রাখার জন্য এতদিন ব্যবহৃত হত গুয়ান্তানামো বে-র কারাগার। জানা গেছে, আমেরিকায় বসবাসকারী অবৈধ অভিবাসীদের, বিশেষ করে যাদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ আছে তাদের এখানে রাখা হবে।
গতকাল বুধবার এই সংক্রান্ত নির্দেশিকায় স্বাক্ষর করার পরেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডিফেন্স অ্যান্ড হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তরকে দ্রুত এই বিষয়ে তৈরি হবার নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্দেশিকা অনুসারে তিনি গুয়ান্তানামো বে-তে অভিবাসী কেন্দ্র সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছেন। হোয়াইট হাউসের এক অনুষ্ঠানে তিনি জানিয়েছেন, আমেরিকার জনগণের কাছে হুমকি স্বরূপ হয়ে ওঠা অপরাধীদের জন্য গুয়ান্তানামো বে-তে ৩০ হাজার শয্যা বাড়ানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আজকের এই নির্দেশ আমাদের জন্য অভিবাসী অপরাধকে একেবারে নির্মূল করার একধাপ কাছাকাছি নিয়ে আসবে। কারণ এঁদের মধ্যে কেউ কেউ এত খারাপ যে আমরা চাইনা তারা আর ফিরে আসুক বা তাদের দেশের ফিরে যাক। তাই তাদের আমরা গুয়ান্তানামো বে-তে পাঠাতে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে অন্যতম প্রধান ছিল দেশ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়ন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আমেরিকার বর্তমান সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে। কিউবার রাষ্ট্রপতি মিগুয়েল ডিয়াজ-ক্যানেল একে ‘বর্বরতার কাজ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। শরণার্থীদের সমর্থক গোষ্ঠীগুলিও মার্কিন সরকারের এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছে এবং এই নির্দেশিকা কার্যকরী না করার এবং অভিযুক্তদের নির্যাতনের বিষয়ে কংগ্রেসের তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক শরণার্থী সহায়তা প্রকল্প অভিবাসী কেন্দ্রের অস্বাস্থ্যকর অবস্থা এবং তাদের পরিবার ও শিশুদের জন্য অপর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর বিদেশী জঙ্গি সন্দেহভাজনদের আটক করার জন্য ২০০২ সালে গুয়ান্তানামো বে-তে এই নির্বাসন কেন্দ্র তৈরি করেন প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ বুশ। বর্তমানে এই কারাগারে ১৫ জন বন্দী আছে। একসময় এই কারাগারে বন্দির সংখ্যা ছিল ৮০০।
ট্রাম্পের ডেমোক্র্যাটিক পূর্বসূরি জো বাইডেন এবং বারাক ওবামা গুয়ান্তানামো কারাগার বন্ধ করার চেষ্টা করলেও তাতে তাঁরা সফল হননি। যদিও তারা ওই কারাগারে বন্দীর সংখ্যা কমাতে সক্ষম হন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন