
স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফেরত চেয়ে নতুন করে বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে ফ্রান্স ও আমেরিকার মধ্যে। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য তথা মধ্য-বামপন্থী ফরাসি রাজনীতিক রাফায়েল গ্লুকসমান সম্প্রতি আমেরিকার কাছে ঐতিহাসিক এই মূর্তিটি ফেরত চেয়েছেন। হোয়াইট হাউস অবশ্য রাফায়েলের এই দাবি সরাসরি খারিজ করেছে এবং এটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে পাল্টা আক্রমণ করেছে।
১৮৮৬ সালের ২৮ অক্টোবর আমেরিকার স্বাধীনতার শতবর্ষ উপলক্ষ্যে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি উপহার দিয়েছিল ফ্রান্স। ফরাসি শিল্পী ফ্রেডরিক অগাস্ত বার্থোল্ডির তৈরি এই মূর্তি স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রতীক হিসাবে নিউ ইয়র্ক হারবারে স্থাপন করা হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকার নীতিগত অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য রাফায়েল দাবি করেছেন, "যে মূল্যবোধকে সম্মান জানিয়ে এই মূর্তি উপহার দেওয়া হয়েছিল, আমেরিকা সেই মূল্যবোধ হারিয়েছে। তাই মূর্তিটিকে এবার ঘরে ফিরিয়ে আনা দরকার।"
রাফায়েলের এই মন্তব্যে হোয়াইট হাউস তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেন, "আমেরিকা ছিল বলেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফরাসি নাগরিকদের মাতৃভাষা জার্মান হয়নি। ফ্রান্সের উচিত কৃতজ্ঞ থাকা।" এর পাল্টা জবাবে রাফায়েল বলেন, "নর্মান্ডি সৈকতে যারা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন, তাঁদের প্রতি আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব। তবে তারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, অত্যাচারী শাসকের পক্ষে নয়।"
বিশ্লেষকদের মতে, রাফায়েলের এই দাবি কূটনৈতিক চাপে পড়িয়ে দেওয়ার একটি কৌশল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকার মসনদে প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই ফ্রান্স-আমেরিকা সম্পর্কে একাধিক ক্ষেত্রে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ট্রাম্প সরকারের অবস্থান বদল নিয়েও রাফায়েল সরব হয়েছেন। ট্রাম্পের নীতিকে উদ্দেশ্য করেই তিনি এই প্রতীকী দাবি তুলেছেন বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন