
২১৪ জন পণবন্দীকে হত্যা করেছে বালোচ লিবারেশন আর্মি! আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে তেমনটা জানা যাচ্ছে। যদিও পাক সেনাবাহিনীর তরফ থেকে সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিএলএ-এর মুখপাত্র জিয়ান্দ বালোচ এক বিবৃতিতে বলেছেন, "বিএলএ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল। তবে, পাকিস্তানী সেনা তার ঐতিহ্যবাহী একগুঁয়েমি এবং সামরিক ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করে গুরুতর আলোচনা উপেক্ষা করেছে। যার কারণে ২১৪ পণবন্দিকে হত্যা করা হয়েছে"। তবে প্রমাণ হিসেবে কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আনেনি বিএলএ।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরীফ চৌধুরী এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, "সামরিক বাহিনী ৩৩ জন জঙ্গিকে হত্যা করেছে এবং ৩৫৪ জন বন্দীকে উদ্ধার করেছে। বিএলএ যে দাবি করছে, তার কোনও ভিত্তি নেই। উদ্ধার অভিযানে ২৩ জন সেনা, তিনজন রেল কর্মচারী এবং পাঁচজন যাত্রী নিহত হয়েছেন"।
চৌধুরী আরও অভিযোগ করেন যে, ভারত এবং আফগানিস্তান এই বিদ্রোহীদের মদত দিচ্ছে। তবে, উভয় দেশই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেসটি বালুচিস্তানের বোলান জেলার মুশকাফ এলাকা থেকে হাইজ্যাক করেছে বালোচ লিবারেশন আর্মি। ট্রেনটি থামানোর জন্য আগেই বিস্ফোরণের মাধ্যমে রেললাইন উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর ট্রেন থামলে বিএলএ সদস্যরা ট্রেনে উঠে পড়ে।
জাফর এক্সপ্রেসে মোট কতজন যাত্রী ছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে অনুমান করা হচ্ছে প্রায় ৪৪০ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে ৮০ জন সামরিক কর্মী ছিলেন।
বালুচিস্তানে কয়েক দশক ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহ চলছে। বিদ্রোহীদের অভিযোগ, পাকিস্তান সরকার বালুচিস্তানের খনিজ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ শোষণ করছে কিন্তু এতে স্থানীয় জনগণের কোনও উন্নতি হচ্ছে না।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে বিএলএ অন্যতম শক্তিশালী, যারা কয়েক দশক ধরে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
বালুচিস্তান আয়তনের দিক থেকে পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ, যা দেশের মোট ভূমির প্রায় ৪৪ শতাংশ জুড়ে রয়েছে। এই অঞ্চলে গোয়াদরে বিশ্বের অন্যতম গভীর সমুদ্র বন্দর অবস্থিত, যা চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর (সিপিইসি)-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন