Khaleda Zia: বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রয়াত, দেশ জুড়ে শোকের ছায়া

People's Reporter: ক্ষমতায় থাকাকালীন খালেদার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ২০১৮ সালে ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয় তাঁর। ২০২৪ সালে হাসিনা সরকারের পতনের পর জেলমুক্ত হন খালেদা।
বেগম খালেদা জিয়া
বেগম খালেদা জিয়াফাইল ছবি
Published on

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি-র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রয়াত। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন খালেদা জিয়া। বছরের শুরুর দিকে লন্ডনে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। সাময়িক সুস্থ হয়ে ছিলেন। এরপর গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্টের কারণে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানেই এতদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো সূত্রে খবর, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন খালেদা জিয়া। তাঁর ছেলে তথা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও পরিবারের অন্য সদস্যরা এভারকেয়ার হাসপাতালে রয়েছেন।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে বাংলাদেশে আগামীকাল বুধবার থেকে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও আগামীকাল সাধারণ ছুটি থাকবে। জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে একথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে বাংলাদেশ জুড়ে। হাসপাতালের বাইরে ভিড় জমিয়েছেন বিএনপি কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের সকলের চোখে জল।

খালেদার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের দেশত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সহ অন্যান্য বিশ্বনেতারা। শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

বেগম খালেদা জিয়া  

খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৫ সালে, অবিভক্ত বাংলার দিনাজপুর জেলার জলপাইগুড়িতে। বাবা ইসকন্দর আলি মজুমদার ছিলেন চা ব্যবসায়ী। পরে সপরিবার দিনাজপুর শহরে (অধুনা বাংলাদেশে) চলে আসেন ইসকন্দর। ১৯৬০ সালে পাক সেনার তৎকালীন ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ছ’বছর পরে, ১৯৭৭ সালে দেশের প্রেসিডেন্ট হন জিয়াউর রহমান। ১৯৮১ সালে সেনা আধিকারিকদের গুলিতে জিয়াউর রহমান নিহত হলে সক্রিয় রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত নেন খালেদা। ১৯৮৩ সালে বিএনপি-র সহ-সভাপতি হন তিনি। পরের বছর দলের শীর্ষপদে বসেন।

এরপর দীর্ঘ রাজনৈতিক লড়াই-বিক্ষোভের পরে ১৯৯১ সালে খালেদার জনপ্রিয়তায় ভর করে ক্ষমতায় এসেছিল বিএনপি। বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন খালেদা। ১৯৯৬ সালে তিনি দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তবে সেই প্রধানমন্ত্রীত্বের মেয়াদ ছিল মাত্র ১২ দিন। ওই বছরের জুন মাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্বে হওয়া নির্বাচনে জয়ী হয় হাসিনার আওয়ামী লীগ। এরপর ২০০১ সালে হওয়া নির্বাচনে ফের জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা। ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি ওই পদে ছিলেন।

২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তদারকি সরকারের পর্যবেক্ষণে নির্বাচন হয় বাংলাদেশে, যেখানে শোচনীয় পরাজয় হয় বিএনপি-র। খালেদার দল মাত্র ৩০টি আসন পায়। আওয়ামী লীগের মহাজোট পায় ২৬৩টি আসন। আওয়ামী লীগ একক ভাবে পায় ২৩০টি আসন। তার পর থেকেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসর থেকে ক্রমশ হারিয়ে যেতে থাকেন খালেদা।

তবে ক্ষমতায় থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ২০১৮ সালে দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় দুর্নীতির অভিযোগে ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয় তাঁর। ২০২৪ সালে হাসিনা সরকারের পতনের পর জেলমুক্ত হন খালেদা।

বেগম খালেদা জিয়া
Bangladesh: ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে উত্তাল বাংলাদেশ, দুই সংবাদমাধ্যমের দপ্তরে ভাঙচুর, আগুন
বেগম খালেদা জিয়া
Bangladesh: বাংলাদেশ ফিরলেন বেগম খালেদা জিয়া, বাড়লো অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচন ঘোষণার চাপ

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in