
দেশে ফিরলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। দীর্ঘ চার মাসের বেশি সময় লন্ডনে চিকিৎসার পর এদিন তিনি ঢাকায় ফেরেন। তাঁর দেশে ফেরায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচন করার চাপ আরও বাড়লো।
বেগম খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ ফেরায় উজ্জীবিত তাঁর রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (BNP) কর্মী সমর্থকরা। বিশেষ করে দেশে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি, বাংলাদেশের টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে তাঁর দেশে ফিরে আসায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছুটা চাপের মধ্যে পড়বে।
খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে বিএনপি-র সেক্রেটারি জেনারেল মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদমাধ্যমে বলেন, এটা দেশের জন্য খুব আনন্দদায়ক এক মুহূর্ত। গণতন্ত্রের এই কঠিন সময়ে তাঁর উপস্থিতি আমাদের দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বিশ্বাস করি খালেদা জিয়া ফিরে আসায় দেশে গণতন্ত্র রক্ষার পথ আরও সুগম হবে।
এদিন বেগম খালেদা জিয়াকে সম্বর্ধিত করতে ঢাকা বিমানবন্দর, তাঁর বাড়ির সামনে এবং সমস্ত রাস্তায় উৎসাহী জনতার ভিড় দেখা যায়। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে তাঁকে বেশিরভাগ সময়ই হাসপাতালে কাটাতে হয়েছে তবুও তাঁর জনপ্রিয়তা যে একটুও কমেনি তার প্রমাণ এদিন পাওয়া গেছে। এদিন ৭৮ বছর বয়সী নেত্রী হুইল চেয়ারে করে বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর সময় উপস্থিত মানুষজন তাঁকে অভিনন্দিত করেন।
বাংলাদেশে তিনবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। যার মধ্যে দু’বার তিনি পূর্ণ সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। একবার তিনি মাত্র কয়েক মাসের জন্য প্রধানমন্ত্রী হন। তাঁর চরম প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ হাসিনার আওয়ামী লিগ সরকার তাঁকে বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার তহবিল থেকে ২ লক্ষ ৬০ হাজার আমেরিকান ডলার অপব্যবহারের অভিযোগে ১৭ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করে। যদিও বিএনপি-র পক্ষ থেকে সেই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলা হয়। গত বছরের আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে সমস্ত অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়।
গত বছরের আগস্ট মাসের ৫ তারিখ দেশজোড়া বিক্ষোভ সামাল দিতে ব্যর্থ হয়ে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলের মতে, বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচন ঘোষণার চাপ বাড়বে। এতদিন পর্যন্ত মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বর্তমান বছরের ডিসেম্বরে অথবা পরের বছরের জুন মাসে নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছিলেন। জানানো হয়েছিল দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন