মধ্য ফিলিপাইন্সে বিধ্বংসী ভূমিকম্পে মৃত্যু হল কমপক্ষে ৬৯ জনের। ভূমিকম্পের জেরে বহু বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে এবং শতাধিক ব্যক্তির আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ ৬.৯ ম্যাগনিটিউড তীব্রতার এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
দ্য ফিলিপাইন ইন্সটিটিউট অফ ভলকানোলজি অ্যান্ড সিসমোলজি জানিয়েছে, ভূমি থেকে ৫ কিলোমিটার গভীরে এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল। সেবু প্রদেশের সমুদ্রতীরবর্তী শহর বোগো-র উত্তর পূর্ব অঞ্চলের ১৯ কিলোমিটার দূরে এই ভূমিকম্পের কেন্দ্র। এই শহরে প্রায় ৯০ হাজার মানুষের বসবাস। সেবু প্রদেশে প্রায় ৩২ লক্ষ মানুষ বসবাস করেন।
সেবুর গভর্নর পাম বারিকুয়াত্রো জানিয়েছেন, মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই বোগো শহরের। দ্রুততার সঙ্গে এই অঞ্চলে উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়েছে এবং ধ্বংসস্তূপ থেকে আহতদের উদ্ধার করা হচ্ছে। যদিও প্রবল বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ চালাতে সমস্যা হচ্ছে। ভূমিকম্পে একাধিক ব্রিজ ভেঙে পড়ার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং বহু জায়গায় উদ্ধারকারীরা পৌঁছাতে পারছেন না।
সান রেমিগো মিউনিসিপালিটির মেয়র মারিয়ানো আর মারটিনেজ এক ফেসবুক পোষ্টে জানিয়েছেন, “সেবুর সান রেমিজিও পুরসভা অঞ্চলে ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার পর এই এলাকার জনগণের জীবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাননীয় পৌর মেয়র ২৮তম সাংগুনিয়াং বায়ানের জরুরি অধিবেশন স্থগিত রেখে, পুরসভার পক্ষ থেকে স্টেট অফ ক্যালামিটি ঘোষণা করছেন।”
ফিলিপাইন নিউজ এজেন্সি এক এক্স বার্তায় জানিয়েছে, ফিলিপাইন্সে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ম্যারিকে কার্লসন ৩০ সেপ্টেম্বর সেবুর বোগোতে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পের পর ফিলিপাইন্সের পাশে দাঁড়ানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন। এই ভূমিকম্পে বেশ কিছু মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
বুধবার কানাডাও ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিপাইন্সের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবার কথা জানিয়েছে। এছাড়াও ভারত, জার্মানি, চেক প্রজাতন্ত্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশী মিশনগুলি ফিলিপাইন্সের প্রতি সংহতির বার্তা পাঠিয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের প্রতি তাদের সহানুভূতি জানিয়েছে।
এর আগে ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে সেবুতে ৭.২ ম্যাগনিটিউড তীব্রতার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। যে ভূমিকম্পে মৃত্যু হয় ২২০ জনের। তীব্র ওই ভূমিকম্পে সেবুর বহু ঐতিহাসিক স্থল সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন