

জল্পনা ছিলই যে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগ করবেন। সোমবার নিজের পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন তিনি। প্রায় ১ দশক ধরে কানাডার শাসনভার সামলেছেন তিনি। দলের ভিতরে ও বাইরে একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ায় বাধ্য হলেন পদত্যাগ করতে। তবে দেশের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করলেন তিনি।
অটোয়ায় সাংবাদিক সম্মেলন করে ৫৩ বছর বয়সী ট্রুডো নিজের হতাশার জায়গা তুলে ধরলেন সকলের সামনে। তিনি বলেন, "যদি আমার কেবল একটিমাত্র আফসোস থাকে, তবে তা হল দেশের নির্বাচন পদ্ধতিতে সংস্কার আনা। আমি আশা করেছিলাম মানুষ তাদের ভোটের মাধ্যমে প্রকৃত পছন্দের স্বাধীনতা পাবে। একটি ব্যালটের মাধ্যমে প্রথম পছন্দ, দ্বিতীয় পছন্দ অথবা তৃতীয় পছন্দের কাউকে বাছাইয়ের সুযোগ থাকবে তাঁদের কাছে।
বৈদেশিক নীতি নিয়ে দলের অভ্যন্তরেই প্রশ্নের মুখে পড়ছিলেন ট্রুডো। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর উপর থেকে সমর্থন তুলে নেন দলের নেতারাই। ট্রুডো জানান, "এটি স্পষ্ট যে দল এবং দেশের স্বার্থে আমার সরে যাওয়াই শ্রেয়। আমি সবসময় এই দেশের জন্য লড়াই করব এবং কানাডিয়ানদের সর্বোত্তম স্বার্থে যা করার আমি তাই করব"।
২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো লিবারেলদের ক্ষমতায় আনা ট্রুডো প্রগতিশীল হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। নিজের দক্ষতার পাশাপাশি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডোর পুত্র হওয়ার কারণে দেশ এবং বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা ছিল জাস্টিন ট্রুডোর। তবে সাম্প্রতিক কালে একাধিক নীতির কারণে চাপ তৈরি হচ্ছিল তাঁর উপর। যেমন ভারতের সাথে সম্পর্ক তিক্ত হয় কানাডার। ২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সারের একটি গুরুদ্বারের সামনে খালিস্তানপন্থী জঙ্গী হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকান্ডের পরেই ভারত-কানাডার সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু।
ট্রুডোর পদত্যাগে নেতৃত্বহীন হয়ে পড়েছে লিবারেল পার্টি। দ্রুত পরবর্তী নেতা নির্বাচন করার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। সূত্রের খবর, প্রাক্তন ব্যাঙ্ক অফ কানাডা গভর্নর মার্ক কার্নি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেনি জোলি সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া ট্রুডোর জায়গা নিতে পারেন কানাডার বর্তমান পরিবহন ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যমন্ত্রী অনিতা আনন্দ অথবা বর্তমান অর্থমন্ত্রী ডমিনিক লেব্ল্যাঙ্ক।
অন্যদিকে কনজারভেটিভ নেতা পিয়েরে পোইলিভর ট্রুডোর পদত্যাগকে "কানাডার জন্য নতুন সূচনা" বলে অভিহিত করেছেন। পাশাপাশি তিনি দেশের সীমানা এবং আর্থিক নীতিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একাধিক সমীক্ষায় আগামী নির্বাচনে কনজারভেটিভদের সরকারে আসার ইঙ্গিত মিলেছে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন