সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষণ ব্যবস্থা তুলে নিতে হবে। এমনই দাবি তুলে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছে বাংলাদেশ জুড়ে। যার ফলে স্তব্ধ ছিল ঢাকার সঙ্গে গোটা দেশের সড়ক এবং রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। বুধবার বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট সংরক্ষণ ব্যবস্থার উপরে স্থগিতাদেশ ঘোষণার পর ওইদিন সন্ধ্যায় শাহবাগ মোড় থেকে আন্দোলন তুলে নেন পড়ুয়ারা। পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সারা দেশে আবারও ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে একই ভাবে সংরক্ষণ তোলার দাবি তুলে বিক্ষোভ শুরু হয় গোটা বাংলাদেশ জুড়ে। সেই সময় সরকারি চাকরীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ সংরক্ষিত এবং ৪৪ শতাংশ সাধারণের জন্য নির্ধারিত ছিল। এই ৫৬ শতাংশের মধ্যে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, বিভিন্ন জেলার জন্য ১০ শতাংশ, জনজাতিদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষিত পদ ছিল।
কিন্তু আন্দোলন শুরু হওয়ার পর শুধু জনজাতিদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষিত পদ ছাড়া বাকি কোটা বাতিল করে দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আন্দোলন তুলে নেন পড়ুয়ারা। এরপর ২০২১ সালে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধার স্বজন ২০১৮ সালের সংরক্ষণ বাতিলের নির্দেশের বৈধতা তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
হাইকোর্ট গত ৫ জুন সেই মামলার নির্দেশ দিয়ে জানায়, ২০১৮ সালের নির্দেশনামা অবৈধ। এরপর ফের আন্দোলন শুরু করেন পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, সরকারি চাকরির সব গ্রেডে ন্যূনতম কোটা (৫ শতাংশ) রেখে কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার করে সংসদে আইন পাশ করতে হবে। এরপর রাষ্ট্র হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এক মাসের জন্য গোটা বিষয়টির উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। আদালত জানিয়েছে, হাইকোর্ট পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করলে সেটা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ আগষ্ট। এরপরেও আন্দোলন তুলে নিতে নারাজ আন্দোলনকারীরা।
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা বুধবারের পর ফের বৃহস্পতিবার আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, আগামীকাল বেলা সাড়ে তিনটা থেকে সারা দেশে রেলপথ ও সড়কে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। বেলা সাড়ে তিনটেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে ব্লকেড কর্মসূচির মিছিল শুরু হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন