Britain: লেবার পার্টি থেকে বহিষ্কৃত হয়েও স্টারমারের গলার কাঁটা ‘বামপন্থী’ জেরেমি করবিন

জেরেমি ১৯৮৩ সালে প্রথম লেবার পার্টির প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে জিতেছিলেন নর্থ ইসলিংটন থেকে। তারপর এই কেন্দ্র থেকে থেকে টানা জিতেছেন তিনি। একবারের জন্য পরাজিত হননি।
( বামদিক থেকে ) জেরেমি করবিন ও কিয়ের স্টারমার
( বামদিক থেকে ) জেরেমি করবিন ও কিয়ের স্টারমারগ্রাফিক্স - সুমিত্রা নন্দন
Published on

এবারেও জিতলেন ব্রিটেনের প্রাক্তন লেবার নেতা জেরেমি করবিন। ব্রিটেনের সাধারন নির্বাচনে লেবার পার্টির জয়জয়াকার। কনজারভেটিভ পার্টিকে হারিয়ে ১৪ বছর পর আবারও ক্ষমতায় আসতে চলেছে লেবার পার্টি। কিন্তু এবার সেই লেবার পার্টিতে জায়গা হয়নি ৭৫ বছরের সোশ্যালিস্ট জেরেমি করবিনের। যিনি এক সময় লেবারদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

জেরেমি ১৯৮৩ সালে প্রথম লেবার পার্টির প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে জিতেছিলেন নর্থ ইসলিংটন থেকে। তারপর এই কেন্দ্র থেকে থেকে টানা জিতেছেন তিনি। একবারের জন্য পরাজিত হননি। এবারেও জিতেছেন – তবে লেবার পার্টির প্রতিনিধি হিসাবে নয়। একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে জিতেছেন। হারিয়েছেন লেবার পার্টির ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রার্থী প্রফুল নারগুন্ডকে। করবিন পেয়েছেন ২৪,১২০ ভোট - উল্টোদিকে লেবার পার্টির প্রফুল পেয়েছেন ১৬,৮৭৩ ভোট। এই নিয়ে টানা ৪০ বছর নর্থ ইসলিংটন থেকে প্রতিনিধিত্ব করবেন জেরেমি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ব্রিটেনে লেবার পার্টি মতাদর্শগতভাবে দুই শিবিরে বিভক্ত। একদিকে রয়েছে মধ্যপন্থী, যারা ঐতিহ্যগতভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ। অন্যদিকে আছে বামপন্থীরা। করবিন ছিলেন বামপন্থী শিবিরের নেতা। ২০১৫ সালে দলের আভ্যন্তরীণ নির্বাচনে সবাইকে অবাক করে লেবারদের নেতা নির্বাচিত হন জেরেমি করবিন। আর তারপর থেকেই লেবার পার্টিতে বামপন্থী অংশের প্রভাব বাড়তে থাকে। লেবার পার্টিকে অতিরিক্ত বামদিকে ঝুঁকে পড়তে দেখে – ব্রিটেনের অনেকেই জেরেমি করবিনকে অতিবাম ‘কমিউনিস্ট’ আখ্যাও দিয়েছিল।

সেই সময় জেরেমি করবিনের সহকারী ছিলেন – কিয়ের স্টারমার। কিয়েরকে 'শ্যাডো হোম সেক্রেটারি' হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে সাধারন নির্বাচনে লেবারদের ফলাফল খারাপ হলে করবিন পদত্যাগ করেন। পরবর্তী নেতা নির্বাচিত হন কিয়ের স্টারমার।

স্টারমার নিজে যুব বয়সে কট্টর বামপন্থী ছিলেন। কিন্তু তিনি নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর লেবার ঝুঁকে পড়ে মধ্যপন্থায়। টনি ব্লেয়ার, গর্ডন ব্রাউনদের সময় যেমন লেবার দলে মধ্যপন্থীদের প্রভাব বেড়েছিল – ঠিক সেই পথেই হাঁটতে শুরু করেছেন স্টারমার। লেবার দলের বামপন্থী অংশকে কোণঠাসা করে ফেলেছেন তিনি। ইহুদী বিরোধী মন্তব্যের অজুহাতে বরখাস্ত করেছেন সাবেক নেতা জেরেমি করবিনকে। নর্থ ইসলিংটন থেকে টিকিটও দেওয়া হয়নি করবিনকে। শুধু একা করবিন নয়, বাম শিবিরের একাধিক নেতাকে টিকিট দেওয়া হয়নি এবারের নির্বাচনে।

সাধারণ নির্বাচনে সারা ব্রিটেন জুড়ে লেবার ঝড় উঠলেও – জেরেমি করবিনকে হারাতে পারেনি কিয়ের স্টারমারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি। নর্থ ইসলিংটন কেন্দ্র থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবেই জিতেছেন তিনি। দল থেকে বহিষ্কার করলেও স্টারমারের গলার কাঁটা হিসেবেই রয়ে গেলেন কট্টর বামপন্থী জেরেমি করবিন। সুবক্তা হিসাবে পরিচিত লেবার দলের সাবেক নেতার ঝাঁঝালো প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে স্টারমারকে।

( বামদিক থেকে ) জেরেমি করবিন ও কিয়ের স্টারমার
Great Britain: ব্রিটেনে দুই উপনির্বাচনে ঋষি সুনকের রক্ষণশীল দলের হার, জয়জয়কার লেবার পার্টির

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in