
ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড বা আইএমএফ-এর পর এবার পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্যের জন্য এগিয়ে এল এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি)। পাকিস্তানের জন্য ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা) বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করল এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (ADB)। দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা জোরদার এবং জনসাধারণের আর্থিক অবস্থা উন্নত করতে এই সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রীর উপদেষ্টা খুররম শেহজাদ সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, "এডিবি ৮০০ মিলিয়ন ডলারের আর্থিক প্যাকেজ অনুমোদন করেছে। প্যাকেজটিতে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের নীতি-ভিত্তিক ঋণ (Policy-Based Loan - PBL) এবং ৫০০ মিলিয়ন ডলারের প্রোগ্রাম-ভিত্তিক গ্যারান্টি (Program-Based Guarantee - PBG) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।" সূত্রের খবর, পাকিস্তানের এই ঋণের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছিল ভারত।
এডিবির পক্ষ থেকেও এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, নীতি-ভিত্তিক গ্যারান্টি হিসেবে ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রথমবারের মতো অনুমোদন করা হয়েছে। যা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত অর্থ সংগ্রহে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এডিবির পাকিস্তান কান্ট্রি ডিরেক্টর এমা ফ্যান বলেন, “পাকিস্তান ম্যাক্রো অর্থনীতির ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। এই আর্থিক সাহায্য সরকারের সংস্কারমূলক পদক্ষেপকে আরও জোরালো করবে এবং টেকসই প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে।”
এই সংস্কারমূলক কর্মসূচির আওতায় কর ব্যবস্থার উন্নতি, নীতিমালায় আধুনিকীকরণ, ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার, ব্যয়ের দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ সহায়তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পাক সরকারের লক্ষ্য দেশীয় রাজস্ব বাড়িয়ে বিদেশী ঋণের ওপর নির্ভরতা কমানো এবং সামাজিক উন্নয়নমূলক খাতে অধিকতর ব্যয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা।
উল্লেখ্য, এডিবি একটি আঞ্চলিক উন্নয়নমূলক ব্যাঙ্ক, যা এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করে। এর সদর দফতর রয়েছে ফিলিপিন্সে। এ ছাড়া বিশ্বের নানা প্রান্তে এডিবি-র মোট ৩১টি দফতর রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত সংঘর্ষ আবহে পাকিস্তানের জন্য ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ মঞ্জুর করেছিল ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড বা আইএমএফ। এরও তীব্র বিরোধিতা করেছিল ভারত। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, 'আইএমএফ-এর কাছ থেকে বহুদিন ধরেই ঋণ নিচ্ছে পাকিস্তান। কিন্তু তার সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। এমনকি আইএমএফ-র শর্তও মানছে না পাকিস্তান। শর্ত মানলে বার বার ঋণের প্রয়োজন হত না। ২০১৯ সাল থেকে চারটি আইএমএফ প্রকল্প হয়েছে। আগের প্রকল্পগুলির ঋণের টাকা সঠিক ভাবে ব্যবহার করেনি পাকিস্তান।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন