যখন জনগণের কাছ থেকে চুরি করবেন, তখন জেনে রাখবেন যে জনগণ জেগে উঠবে। ব্যালট বক্সে এবং রাস্তায়। শনিবার আমেরিকায় ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে শামিল হয়ে ফ্লোরিডায় একথা জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তাদের মতে, নতুন মার্কিন সরকারের দখল নিয়েছে কোটিপতিরা। বিক্ষোভকারীরা আরও জানাচ্ছেন, তাঁরা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হারিয়ে ফেলছেন বলে রাস্তায় নেমেছেন।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে ৫ তারিখের এই বিক্ষোভে শামিল হবার আহ্বান জানিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, “আমাদের গণতন্ত্র হুমকির মুখে। কিন্তু আমরা ফ্যাসিবাদের কাছে নতি স্বীকার করব না। আমরা একসাথে রুখে দাঁড়াবো এবং আমাদের অধিকার, আমাদের সম্প্রদায় এবং আমাদের মূল্যবোধ রক্ষায় লড়াই করব। আমাদের সাথে যোগ দিন।” তারা আরও জানিয়েছেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং এলন মাস্ক মনে করেন এই দেশটি তাদের। আমরা তাদের একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়ে লড়াই করার জন্য দেশব্যাপী রাস্তায় নামছি: হ্যান্ডস অফ!”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল আমেরিকা। শনিবার ওয়াশিংটন ডিসি সহ আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তায় নেমে সাধারণ মানুষ ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন। চলতি বছরে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতাসীন হবার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর সহযোগী ধনকুবের এলন মাস্কের সাম্প্রতিক জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে এটাই এযাবৎকালের সর্বাধিক জনবিক্ষোভ। উল্লেখযোগ্যভাবে কুড়ি থেকে তিয়াত্তর - প্রায় সব বয়সের মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন।
ওয়াশিংটন মনুমেন্ট ঘিরে বহু মানুষ ভিড় করেছেন। আয়োজকদের দাবি, কমপক্ষে কুড়ি হাজার মানুষ ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে শামিল হয়ে ন্যাশনাল মল পর্যন্ত মিছিল করবেন। বিক্ষোভকারীদের কারোর কারোর হাতে ইউক্রেনের পতাকা দেখা গেছে। পাশাপাশি কেউ কেউ এই বিক্ষোভে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা ব্যানারও নিয়ে এসেছেন।
ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫০টি সংগঠনের সদস্যরা শামিল হয়েছেন। এদের মধ্যে বিভিন্ন নাগরিক অধিকার সংগঠন, শ্রমিক ইউনিয়ন, LBGTQ+ সংগঠন, আইনজীবী, প্রবীণ সৈনিক এবং নির্বাচনী কর্মীদের সংগঠনও আছে। বহু মানুষের জমায়েত সত্ত্বেও সমাবেশগুলি শান্তিপূর্ণ ছিল এবং তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তারের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। আমেরিকার ৫০ টি রাজ্যের কমপক্ষে ১২০০ জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুসারে, আমেরিকা জুড়ে বিক্ষোভের সংখ্যা ১৪০০ ছাড়িয়েছে এবং এই বিক্ষোভগুলিতে ৬ লক্ষের বেশি মানুষ অংশ নেবেন বলে সম্মত হয়েছিলেন। এছাড়াও কানাডা এবং মেক্সিকোতেও এই বিক্ষোভ হচ্ছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, তারা ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘোষণায় উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে তাঁর নতুন শুল্ক ঘোষণার পর দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কী হতে চলেছে তা নিয়ে তারা শঙ্কিত।
গতকাল শিকাগো, আটলান্টা, বোস্টন, সান জোসে, ক্যালিফোর্নিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, ফ্লোরিডা, মিয়ামি, ম্যানহাটন, আলাস্কা সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভে বহু সাধারণ মানুষও অংশ নিয়েছেন। মানবাধিকার প্রচার সংগঠনের সভাপতি কেলি রবিনসন ওয়াশিংটনে এক সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রান্তিক সম্প্রদায়ের প্রতি সরকারের আচরণের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, আমরা যে আক্রমণগুলি দেখছি, সেগুলি কেবল রাজনৈতিক নয়। এগুলি ব্যক্তিগত, আপনারা সকলেই তা দেখতে পাচ্ছি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন