
কৌতুক শিল্পী কুণাল কামরার শিবসেনা প্রধান একনাথ শিন্ডেকে নিয়ে করা মন্তব্য নিয়ে উত্তাল মহারাষ্ট্র রাজনীতি। তাঁর এই মন্তব্যের জন্য মুম্বাইয়ের যে হোটেলে তিনি অনুষ্ঠান করেছিলেন সেটিতে ভাঙচুর চালিয়েছেন শিবসেনার কর্মী সমর্থকেরা। কৌতুক শিল্পীর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে এফআইআর। তাঁকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবিশ। এই আবহে কুণালের পাশে দাঁড়িয়ে বাক স্বাধীনতা নিয়ে সরব হলেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ তথা অভিনেত্রী জয়া বচ্চন।
এদিন সংসদ চত্বরে সংবাদ মাধ্যমের সামনে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে জয়া বচ্চন প্রশ্ন তোলেন, "কথা বলার উপর যদি বিধিনিষেধ থাকে, তাহলে আপনাদের কী হবে? আপনারা খুব খারাপ অবস্থায় আছেন। বিধিনিষেধের মধ্যে আছেন। আপনাদেরকে বলা হবে শুধু নির্দিষ্ট বিষয়ে কথা বলতে। তাহলে বাক স্বাধীনতা কোথায়?"
এরপরেই মুম্বাইয়ের হোটেলে শিবসেনা কর্মীদের ভাঙচুর চালানোর তীব্র নিন্দা জানিয়ে সাংসদ-অভিনেত্রী বলেন, "কিছু বলার প্রতিক্রিয়ায় যদি এমন কাণ্ড ঘটানো হয়, তা হলে বাক্স্বাধীনতাটা কোথায়?... আপনি (একনাথ শিন্ডে) নিজের দল ছেড়ে শুধু ক্ষমতার জন্য অন্য দল গঠন করেছেন। এটা কী বালাসাহেবের অপমান নয়?"
উল্লেখ্য, 'নয়া ভারত' নামক একটি অনুষ্ঠানে বর্তমান ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে বিদ্রুপের ছলে কিছু মন্তব্য করেছেন কুণাল। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শিন্ডের নাম না করেই জনপ্রিয় একটি হিন্দি গানের নকল করে তাঁর অঙ্গভঙ্গি এবং শারীরিক গঠন বর্ণনা করছেন তিনি। এমনকি এক জায়গায় শিন্ডেকে 'গদ্দার' বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আর সেই ভিডিও সামনে আসার পর থেকেই কুণালের বিরুদ্ধে সরব হন শিবসেনার সমর্থকেরা।
মুম্বাইয়ের হ্যাবিট্যাট স্টুডিওতে প্রায় একমাস আগে রেকর্ড হয়েছে ওই ভিডিওটি। কুণাল কামরার মন্তব্যের প্রতিবাদে রবিবার ওই স্টুডিওতে ভাঙচুর চালান শিবসেনা কর্মীরা। এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শিবসেনা কর্মী সমর্থকেরা স্টুডিওর চেয়ার, ক্যামেরা, লাইট, স্পিকার নষ্ট করে দিয়েছেন। শিবসেনার অভিযোগ, একনাথ শিন্ডের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই কাজ করেছেন কুণাল। তাদের আরও অভিযোগ, টাকার বিনিময় কৌতুকশিল্পী এই কাজ করেছেন।
কুণালের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ সোমবার সকালে তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলেন। যদিও কুণাল পুলিশকে জানিয়েছেন, তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন তিনি, তবে তাঁর ‘গদ্দার’ মন্তব্যের জন্য অনুতপ্ত নন তিনি। ক্ষমা তিনি চাইবেন না। তবে আদালত কোনও নির্দেশ দিলে তা মেনে চলবেন তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন