
ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে বদল আনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা আর. মাধবন। তাঁর মতে, ভারতের প্রাচীন ইতিহাসে দক্ষিণ ভারতের অবদানকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।
সম্প্রতি করণ সিং ত্যাগীর 'কেশরী চ্যাপ্টার ২'-তে অভিনয় করেছেন আর মাধবন। তিনি বলেন, “আমার মনে হচ্ছে এই কথা বলার জন্য হয়তো আমি সমস্যায় পড়তে পারি, কিন্তু আমি বলব। আমার স্কুলজীবনের ইতিহাস পাঠ্যক্রমে মুঘলদের উপর আটটি অধ্যায় থাকলেও, হরপ্পা এবং মহেঞ্জো-দারো সভ্যতার উপর দুটি, ব্রিটিশ শাসন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের উপর চারটি এবং দক্ষিণ রাজ্য - চোল, পাণ্ড্য, পল্লব ও চেরা সাম্রাজ্য নিয়ে ছিল মাত্র একটি অধ্যায়।"
মাধবনের কথায়, “চোল সাম্রাজ্য প্রায় ২,৪০০ বছর রাজত্ব করেছে। তারা সমুদ্রযাত্রা ও নৌশক্তির পথিকৃৎ ছিল, তাদের বাণিজ্য রোম পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল, এমনকি আংকরভাট পর্যন্ত মন্দির নির্মাণ করেছিল। অথচ এই সবই একটি মাত্র অধ্যায়ে সীমাবদ্ধ। অন্যদিকে মুঘল আর ব্রিটিশরা মোট ৮০০ বছর শাসন করেছে।"
তামিল ভাষার গুরুত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। অভিনেতা বলেন, “তামিল পৃথিবীর প্রাচীনতম ভাষা, কিন্তু আজও আমরা সেটা উদযাপন করি না। কারা এই পাঠ্যক্রম তৈরি করেছে? জৈন ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম এবং হিন্দু ধর্ম চীনে ছড়িয়ে পড়ে। কোরিয়ার লোকেরা অর্ধেক তামিল বলে কারণ আমাদের ভাষা এতদূর পৌঁছেছে। আমাদের সংস্কৃতিতে লুকিয়ে থাকা বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকেও আজ উপহাস করা হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, এমন সময় মাধবন এই মন্তব্য করেছেন যখন এনসিইআরটি তাদের সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে বড় পরিবর্তন এনেছে। সপ্তম শ্রেণির নতুন সিলেবাসে মুঘল ও দিল্লি সুলতানি সাম্রাজ্যের বড় অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বর্ণব্যবস্থা ও সামাজিক আন্দোলনের উল্লেখও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন সংযোজন হিসেবে উঠে এসেছে আধুনিক প্রকল্প যেমন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’, 'প্রয়াগ্রাজের কুম্ভমেলা', 'অটল সুড়ঙ্গ নির্মাণ', ‘চারধাম যাত্রা’ ইত্যাদি। এই পরিস্থিতিতে অভিনেতার এমন মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন