কোটি কোটি টাকার প্রতারণা মামলায় এবার লুকআউট নোটিশ জারি হল খ্যাতনামা হেয়ারস্টাইলিস্ট জাভেদ হাবিব এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে। উত্তরপ্রদেশের সম্ভল পুলিশ খ্যাতনামা এই হেয়ারস্টাইলিস্টের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেছে। ইতিমধ্যেই ২০টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে জাভেদ হাবিবের ছেলে এবং আরও তিনজনের বিরুদ্ধে।
সম্ভলের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এই মামলায় ৫ থেকে ৭ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের অনুমান, হাবিব এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ওঠা প্রতারণা মামলায় টাকার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
সম্ভলের পুলিশ সুপার কে কে বিষ্ণোই এ বিষয়ে জানান, এখন পর্যন্ত ৩৫ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি প্রতারণার অভিযোগ করেছেন এবং তদন্তে প্রাথমিকভাবে এক কোটি টাকারও বেশি লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, “সম্ভলে অপরাধ রুখতে এবং প্রতারকদের ধরতে বিশেষ অভিযান চলছে। জাভেদ হাবিব, তাঁর ছেলে এবং আরও তিনজনের বিরুদ্ধে ২০টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এই গোষ্ঠী মানুষকে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে ৫-৭ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নিত।"
তদন্তে দেখা গেছে, হাবিবের স্ত্রী এফএলসি নামে একটি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। বর্তামানে যার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে অনলাইন লেনদেন। পুলিশ সূত্রে আরও খবর, ২০২৩ সালে সম্ভলে ওই সংস্থা একটি বড় আকারের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল। যেখানে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
যদিও জাভেদ হাবিবের আইনজীবী এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মঙ্গলবার তাঁর আইনজীবী পবন কুমার স্পষ্ট জানিয়েছেন, জাভেদ হাবিব বা তাঁর ছেলের নামে কোনও এফআইআর দায়ের হয়নি। এবং তাঁদের সঙ্গে ‘ফলিকল গ্লোবাল কোম্পানি’ (FLC)-র কোনও আর্থিক বা ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই।
পবন কুমার জানিয়েছেন, “জাভেদ হাবিব নিয়মিতই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হেয়ার ও মেকআপ সংক্রান্ত সেমিনার পরিচালনা করেন। সম্ভলের ওই অনুষ্ঠানেও তিনি কেবলমাত্র অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এটি ছিল তাঁর পেশাগত কার্যক্রমের অংশ মাত্র। এফএলসি নামক সংস্থার সঙ্গে তাঁর কোনও ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই।”
তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালের ২২ জানুয়ারি তারা একটি পাবলিক নোটিশ জারি করেছিলেন। যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছিল যে, জাভেদ হাবিব বা তাঁর পরিবার ‘ফলিকল গ্লোবাল কোম্পানি’-র সঙ্গে যুক্ত নয়। পবন কুমারের কথায়, “আমরা যখন জানতে পারি যে এই সংস্থার নামে প্রতারণা চলছে, তখনই জনস্বার্থে সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করি।”
এদিকে, পুলিশের তদন্ত এখনও চলছে। প্রতারণার শিকার বহু মানুষ অভিযোগ দায়ের করতে থাকায় মোট অর্থের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১৯ সালের ২২ এপ্রিল লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন তৃতীয় পর্বের ভোটগ্রহণের আগে বিজেপিতে যোগদান করেন জাভেদ হাবিব। তাঁর বিজেপিতে যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা তরুণ চুঘ এবং সঞ্জয় ময়ূখ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন