
গণবিক্ষোভে উত্তপ্ত নেপাল। ইতিমধ্যেই বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। সে দেশের এহেন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নেপালের ভূমিকন্যা অভিনেত্রী মনীষা কৈরালা। সমাজ মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, "নেপালের জন্য কালো দিন!"
নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বেশ্বরপ্রসাদ কৈরালার নাতনি মনীষা। মঙ্গলবার কাঠমান্ডুর রাস্তায় পড়ে থাকা একপাটি রক্তমাখা জুতোর ছবি সমাজমাধ্যমে পোষ্ট করে এদিন মনীষা লিখেছেন, ‘‘এটা নেপালের ইতিহাসে কালো দিন, যেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, ন্যায়বিচারের দাবিতে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদী কণ্ঠ থামাতে পাল্টা বুলেট ছোড়া হয়।’’
গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে নেপালে ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স (পূর্বতন টুইটার) সহ ২৬টি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। যার প্রতিবাদে সোমবার রাজধানী কাঠমান্ডুর নিউ বাণেশ্বরে বিক্ষোভ দেখান জেন-জি প্রজন্ম। মূলত ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে যুবক-যুবতীরা এই বিক্ষোভে সামিল হন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ গুলি চালায়। যার জেরে মৃত্যু হয় ১৯ জন বিক্ষোভকারীর। বিক্ষোভের প্রকোপ বাড়ায় সোমবার রাতেই সমাজ মাধ্যমের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। উল্টে মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তুলে শুরু হয় বিক্ষোভ।
চূড়ান্ত বিক্ষোভের মধ্যেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ওলি। এদিন সকালেই তিনি ঘোষণা করেন, সন্ধ্যায় সর্বদল বৈঠক করবেন। পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, সমস্যার সমাধানের পথ কী, তা নিয়েই আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার আগেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। ফলে চাপের মুখে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হন ওলি।
শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের কায়দায় নেপালের গণবিক্ষোভ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি করার কথা সামনে এলেও তথ্যভিজ্ঞ মহল মনে করছেন এর পেছনে অন্য কারণ আছে। বিশেষ করে নেপালের রাজনৈতিক নেতৃত্বের চরম দুর্নীতি সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বৈষম্য বাড়িয়েছে। যা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছিলেন সাধারণ মানুষ। এই বিক্ষোভ তারই পরিণতি। শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে দেশজুড়ে সাধারণ ছাত্র যুব এভাবে রাস্তায় নামেননি।
কোনও কোনও সূত্র অনুসারে, বিদেশী কোনও শক্তি নেপালে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে এবং রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। বহিরাগত শক্তির মদত ছাড়া এভাবে বিক্ষোভ সংগঠিত হতে পারে না বলেও তাদের অভিমত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন