
আইপিএলের গোটা সিজন জুড়ে ভালো পারফরম্যান্স করে গিয়েছেন যশস্বী জয়সওয়াল এবং শ্রেয়স আইয়ার। তারপরেও এশিয়া কাপে দলে জায়গা পেলেন না তাঁরা। যশস্বীকে স্ট্যান্ড বাই করে রাখলেও শ্রেয়সের নাম নেই কোথাও। এরপরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কেন এশিয়া কাপে নেই বর্তমান প্রজন্মের সেরা দুই ব্যাটার। দল ঘোষণার পর যার ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর। যদিও সেই যুক্তিতে বেশিরভাগই রয়েছে নির্বাচনের সীমবদ্ধতার কথা।
যশস্বীকে প্রথম একাদশে না রাখার জন্য বল না করতে পারাটাকেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন আগরকর। তিনি বলছেন, ‘‘যশস্বীর দলে না থাকা দুর্ভাগ্যজনক। অভিষেকের অতীত পারফরম্যান্স উপেক্ষা করা কঠিন ছিল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওর পারফরম্যান্স আমরা জানি। অভিষেক বলও করতে পারে। অধিনায়কের হাতে অতিরিক্ত বিকল্প থাকবে। ওদের দু’জনের মধ্যে এক জনকে বসতেই হতো।’’
এরপরেই প্রশ্ন উঠছে অক্ষর প্যাটেলের মতো একজন বাঁহাতি স্পিনার থাকার পরেও আরেকজন বাঁহাতি স্পিনারের আদৌ দরকার পড়বে? গত আইপিএলে যশস্বী ১৪ টা ম্যাচে ৪৩ গড়ে ৫৫৯ রান করেছেন। তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫৯.৭১।
অন্যদিকে, শ্রেয়সকে দলে না রাখার কারণ হিসেবে কোনো ক্রিকেটীয় যুক্তি নয় বরং দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাঁর সীমাবদ্ধতাকে তুলে ধরেছেন প্রধান নির্বাচক। শ্রেয়স প্রসঙ্গে আগরকারের বক্তব্য, "শ্রেয়সকে দলে না রাখতে পারা আমাদের দোষ নয়। দলে সুযোগ না পাওয়াটা ওর দোষও নয়। দলে ১৫ জনই থাকতে পারে। ১৫ জনের বেশি ক্রিকেটারকে রাখার সুযোগ নেই। কার জায়গায় ওকে নিতাম?’’ যদিও শ্রেয়সের ক্ষেত্রে আগরকর কোনও ক্রিকেটীয় দুর্বলতার কথা বলতে পারেননি।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, শিবম দুবের জায়গায় শ্রেয়সকে দলে রাখাই যেত। যদিও সেক্ষেত্রে অলরাউন্ডারের তত্ত্ব দেখাতেন আগরকর। তবে প্রশ্ন উঠছে, জসপ্রীত বুমরাহ-অর্শদীপ সিংহেরা থাকতে দুবে বল হাতে বাড়তি কী করবেন? বুমরাহ ব্যর্থ হলে দুবে সেখানে বল হাতে সামলাতে পারবে? সাদা বলে মিডল অর্ডারের সেরা ব্যাটার। বারবার সেটা প্রমাণ দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, গত দু বছরের আইপিএলে অন্যতম সেরা অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। ২০২৫ এর আইপিএলে ১৭টা ম্যাচে ৫০.৩৩ গড়ে ৬০৪ রান করেন তিনি। তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ১৭৫.০৭। অর্ধ শতরান করেছেন ৬টা। তারপরেও এশিয়া কাপে দলে জায়গা মিলল না তাঁর। প্রশ্ন উঠছে, জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার জন্য একজন ভালো ব্যাটার হিসেবে আর কী কী প্রমাণ দিতে হবে?
তবে ১৫ জনের দলের দিকে চোখ রাখলে আগরকরের যুক্তি অকাট্য বলে নাও হতে পারে। দলে এমন ব্যাটার রয়েছেন, যাদের থেকে ক্রিকেটীয় দক্ষতায় শ্রেয়স অনেকটাই এগিয়ে। তবুও দলে তাঁর জায়গা না হওয়াটা বিষ্ময়কর। তবে আগরকরের দাবি, ভারসাম্য বজায় রাখতেই দলে রাখা হয়নি তাঁকে। এমনকি স্ট্যান্ড বাইতে রাখলে সম্মানহানি হত তাঁর, সেকারনেই শ্রেয়সকে রাখা হয়নি রিজার্ভে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন