
লোকসভার পর এবার রাজ্যসভায় পাশ হল ‘দ্য প্রোমোশন অ্যান্ড রেগুলেশন অফ অনলাইন গেমিং বিল, ২০২৫’। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রের তথ্যপ্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিক্স মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। কোনও বিতর্ক ছাড়াই ধ্বনিভোটের মাধ্যমে পাশ হয় বিলটি। দুই কক্ষেই বিল পাশ হওয়ার ফলে এখন শুধু অপেক্ষা রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের। স্বাক্ষর মিললেই নতুন আইন হবে।
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, এই নয়া বিলে অনলাইন গেমিংকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে সব ক্ষেত্রে অর্থের বিনিময়ে খেলা হয়, সেগুলি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া নয়া বিলে বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে আর্থিক লেনদেনে যুক্ত অনলাইন গেমের জন্য তহবিল স্থানান্তর বা সহায়তাতেও বিধিনিষেধ জারির প্রস্তাব রয়েছে।
অনলাইন গেমিংয়ে বাজি ধরার নেপথ্যে প্রতি বছর গড়ে ভারতে ১০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। তাই কয়েক বছরে গেমিং শিল্পে একাধিক ছোট-বড় সংস্থা গড়ে উঠেছে। আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলিতে বেশ জনপ্রিয় অনলাইন গেমিং। কিন্তু সেখানে রয়েছে একাধিক নিয়ম। কেওয়াইসি, বিজ্ঞাপন এবং প্রচারের নানা নিয়ম রয়েছে। সমস্ত নিয়ম মেনে নিলেই তবেই মেলে ছাড়পত্র।
তবে ফ্যান্টাসি গেমিংয়ের ক্ষেত্রে ঘুরপথে লেনদেন হয় টাকা। এখানে প্রথমে অল্প টাকায় তারকা বা খেলোয়াড়দের নিয়ে তালিকা বানাতে হয়। সেই খেলোয়াড়রা বাস্তবে কেমন ফল করলেন, তার ভিত্তিতে টাকা লেনদেন হয়। জিতলে লক্ষ লক্ষ টাকার পুরস্কারের হাতছানি থাকে।
যদিও কেন্দ্রের এই নয়া বিল নিয়ে বিভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞ এবং বণিক মহলের একাংশ। তাঁদের দাবি, সার্বিক নিষেধাজ্ঞা জারি না করে বিকল্প কিছু ভেবে দেখা যেত। যদিও সরকারি সূত্রের দাবি, অনলাইন গেমগুলিতে বিপুল পরিমাণে টাকা লেনদেন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই একাধিক অভিযোগ আসছে। এমনকি, ব্যবহারকারীদের অজান্তেই টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগও রয়েছে।
এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান, এখানে অংশ নিয়ে অন্তত ৪৫ কোটি মানুষ টাকা হারিয়েছেন। এই আবহে পাশ হওয়া নতুন বিলে বলা হয়েছে, অনলাইন গেমিং পরিচালনা করলে এক কোটি টাকা জরিমানা এবং তিন বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন