টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেই ক্রিকেটের নিয়মে একাধিক পরিবর্তন আনলো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল(ICC)। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন আইসিসি ক্রিকেট কমিটি কিছুদিন আগে নিয়ম পরিবর্তনের জন্য, সংস্থার সিইও-র কাছে সুপারিশ করে। সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি নতুন নিয়মে সিলমোহর দিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। ১ অক্টোবর থেকে এই নতুন নিয়মগুলি ক্রিকেটে প্রযোজ্য হবে।
দেখে নেওয়া যাক কোন কোন নিয়ম কার্যকর হতে চলেছে -
১. ক্যাচ আউটে ব্যাটারের অবস্থান: এতদিন পর্যন্ত ক্যাচ আউটের সময় বলটি ফিল্ডারের হাতে ধরা পড়ার আগে দুই ব্যাটার যদি নিজেদের ক্রস করে ফেলেন, তাহলে নতুন ব্যাটার নন স্ট্রাইক প্রান্তে খেলা শুরু করেন। তবে এখন থেকে নতুন নিয়মে আর তা হবে না। নতুন ব্যাটার সবসময় আউট হওয়া ব্যাটারের জায়গায় অর্থাৎ স্ট্রাইকার হিসেবে ব্যাটিং শুরু করবে।
২. ক্রিকেট বলে লালা ব্যবহারে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা: করোনার সময় সংক্রমণ রোধের জন্য ক্রিকেট বলে লালার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এবার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও লালার ব্যবহারে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করলো আইসিসি।
৩. ব্যাটিং শুরুর জন্য কমলো সময়: ওয়ান ডে এবং টেস্টে কোনো ব্যাটার আউট হওয়ার পর নতুন ব্যাটারকে ক্রিজে এসে প্রথম বল খেলার জন্য প্রস্তুত হতে হবে দু'মিনিটের মধ্যে। পুরোনো নিয়মে এই সময় ছিল তিন মিনিট। টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য তিন মিনিটই সময় রাখা হয়েছে।
৪. পিচ ব্যবহারের ব্যাটারের অধিকার: যে কোনও বল খেলার জন্য ব্যাটারের ব্যাট অথবা শরীরের যে কোনও অংশ পিচের ভেতরেই থাকতে হবে। নাহলে এটি ডেড বল হিসেবে গণ্য হবে। একইভাবে বোলারের কোনও বল যদি ব্যাটারকে পিচের বাইরে নিয়ে যায় তাহলে সেটি নো বল ঘোষিত হবে।
৫. ফিল্ডিং দলের অনৈতিক জায়গা পরিবর্তন: কোনও বোলার তাঁর রান-আপ শুরু করে দেওয়ার পর ফিল্ডিং দল তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে পারবে না। নতুন নিয়মে এটি ধরা পড়লে ফিল্ডিং দলকে পাঁচ রান পেনাল্টি দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে ডেলিভারিটি 'ডেড বল' হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
৬. নন স্ট্রাইকারকে মানকাডিং আউটের বৈধতা: বিতর্কিত মানকাডিং আউট পেল বৈধতা। এখন থেকে নন স্ট্রাইকার এন্ডে মানকাডিং আউট সাধারণ রানআউটের মতোই গণ্য হবে। এতদিন এই আউটকে ক্রিকেটিয় স্পিরিটের পরিপন্থী বলে বিবেচনা করা হতো।
৭. স্ট্রাইকারকে রান আউটের চেষ্টা বাতিল: কোনও বোলার যদি বোলিং করার সময় পপিং ক্রিজে ঢোকার আগেই দেখেন স্ট্রাইকিং প্রান্তের ব্যাটার ডাউন দ্য উইকেটে চলে এসেছেন, তাহলে বল না করে থ্রো করে ব্যাটারকে রান আউট করতে পারতো। এতদিন পর্যন্ত এই নিয়মই ছিল। তবে নতুন নিয়মে এই চেষ্টা করা যাবে না। এটি করা হলে ডেলিভারিটি ডেড বল হিসেবে গণ্য হবে।
৮. হাইব্রিড পিচ ব্যবহারের অনুমোদন: এখন থেকে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর সম্মতির ভিত্তিতে যে কোনও একদিনের ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হাইব্রিড পিচ ব্যবহার করা যাবে। এতদিন ধরে শুধুমাত্র মহিলাদের একদিনের ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এই পিচ ব্যবহারের অনুমতি ছিল। কোনও টুর্নামেন্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পিচের ব্যবহার ঠিক রাখার জন্য এ বার থেকে হাইব্রিড পিচ তৈরি করার অনুমোদন দেওয়া হল।
৯. ম্যাচ চলার সময় একদিনের ম্যাচে পেনাল্টি শুরু: চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে স্লো ওভার রেটের পেনাল্টি ম্যাচের মধ্যেই দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইনিংস শেষ করতে না পারলে বৃত্তের বাইরে একজন কম ফিল্ডার নিয়ে খেলতে হয় ফিল্ডিং দলকে। চলতি বিশ্বকাপ সুপার লিগ শেষে একদিনের ক্রিকেটেও এই নিয়ম চালু হবে।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।