
চিতা জ্বালানোর জায়গা না পেয়ে লোকালয়েই তুলে আনতে হয়েছে শ্মশান। দালালের হাত থেকে চড়া দামে কেনা অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন রোগীর পরিজনরা। আর এসবের মাঝেই করোনার গ্রাসে বিধ্বস্ত রাজধানীতে মধ্য দিল্লিতে ঝড়ের গতিতে দৌড়চ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া সংসদভবন নির্মাণ এবং সংসদ ভবন চত্বরের সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প।
শুধু তাই নয়, করোনার প্রকোপে যাতে সৌন্দর্যায়নের কাজ থমকে না যায়, তার জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবার মতোই নয়া সংসদ ভবন নির্মাণ প্রকল্পকে জরুরি পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার! তাদের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে জাতীয় রাজনীতি তো বটেই, সমাজের প্রায় সব ক্ষেত্রেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। গতকালই এক ট্যুইট বার্তায় সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক অবিলম্বে এই বিলাসবহুল প্রকল্প বাতিল করে সাধারণ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন।
জরুরি পরিষেবার বাইরে সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ রয়েছে দিল্লিতে। কিন্তু ইন্ডিয়া গেট সংলগ্ন যে এলাকা দিল্লির প্রাণকেন্দ্র, সেই এলাকা গমগম করছে রাজমিস্ত্রি, খননকর্মী এবং ট্রাক-লরির আনাগোনায়। কোদাল হাতে ভিত খুঁড়ে চলেছেন একদল শ্রমিক। আর একদল কড়াইতে সেই মাটি মাথায় চাপিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লরিতে ফেলছেন। লকডাউনে কাজ বন্ধ নেই কেন জানতে চাইলে, 'সেন্ট্রাল ভিস্তা অ্যাভিনিউ উন্নয়নের কাজ চলছে' লেখা ব্যারিকেড দেখিয়ে বলেন 'এখানে কাজ থামবে না।' উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর থেকে কাজ করতে এসেছেন বলে জানান তিনি।
শুধু উত্তরপ্রদেশই নয়, কাজ করার জন্য কীর্তি নগর, প্রশ্চিমবঙ্গ থেকেও শ্রমিকদের নিয়ে আসা হয়েছে। এইসব শ্রমিকদের বিশেষ বাসে করে নিয়ে আসা হয়েছে। যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই প্রকল্পটি নির্মাণ শেষ করা সম্ভব হয়। অভিযোগ দৈনিক ১২ ঘণ্টা কাজের বদলে এই শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে মাত্র ৬০০ টাকা।
যেখানে দেশের মহামারি পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে ভ্যাকসিন, অক্সিজেন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জামের খাতে বরাদ্দ করারা জন্য আবেদন করে আসছেন বিরোধীরা, সেখানে নতুন সংসদ ভবন তৈরির মতো কাজে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করায় সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন