
সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকজন আইনজীবী, সমাজকর্মী এবং সাংবাদিক শ্যাম মীরা সিংয়ের বিরুদ্ধে ত্রিপুরা পুলিশের আনলফুল অ্যাকটিভিটিস (প্রিভেনশন) আইন (ইউএপিএ) প্রয়োগ করার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একটি আবেদনের শুনানি করতে সম্মতি জানিয়েছে।
প্রাথমিকভাবে, প্রধান বিচারপতি এন ভি রমানার নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ আবেদনকারীদের প্রতিনিধিত্বকারী অ্যাডভোকেট প্রশান্ত ভূষণকে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টে যেতে বললেও, পরে শুনানিতে সম্মত হন।
বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং হিমা কোহলির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের সামনে প্রশান্ত ভূষণ জানিয়েছেন যে, আবেদনকারীরা UAPA-এর কিছু অপব্যবহৃত ধারার সাংবিধানিক বৈধতা এবং 'বেআইনি কার্যকলাপ'-এর বিস্তৃত সংজ্ঞাকেও চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন।
আবেদনকারীদের বক্তব্য অনুসারে, বর্তমান পিটিশনটি ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের দ্বিতীয়ার্ধে ত্রিপুরায় মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে লক্ষ্যযুক্ত রাজনৈতিক হিংসার বিষয়ে সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের অধীনে দায়ের করা হচ্ছে৷
এই আবেদনে বলা হয়েছে, উকিল এবং সাংবাদিক সহ নাগরিক সমাজের সদস্যদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন, ১৯৬৭, (পরবর্তীতে ইউএপিএ)-এর ধারার ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলগুলি থেকে যারা পাবলিক ডোমেনে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে হিংসার বিষয়ে তথ্য সামনে আনার চেষ্টা করেছে তাঁদের আটকানো এবং ঘটনা সম্পর্কিত তথ্যের প্রবাহকে একচেটিয়া করার জন্য ত্রিপুরা রাজ্যের এই প্রচেষ্টা।
সম্প্রতি, ত্রিপুরা পুলিশ ইউএপিএ-এর অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধের জন্য এক সাংবাদিক এবং অন্যান্য সমাজকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এর বিরুদ্ধে মুকেশ, আনসারুল হক আনসারি এবং শ্যাম মীরা সিং - তাদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট (এফআইআর) বাতিল করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন।
পিটিশন অনুসারে, আইনজীবী এহতেশাম হাশমির (সুপ্রিম কোর্ট), অ্যাডভোকেট অমিত শ্রীবাস্তব (সদস্য, সমন্বয় কমিটি, লইয়ার্স ফর ডেমোক্রেসি), অ্যাডভোকেট আনসার ইন্দোরি (ন্যাশনাল সেক্রেটারি, এনসিএইচআরও) এবং অ্যাডভোকেট মুকেশ (সদস্য, পিইউসিএল দিল্লি)-র সমন্বয়ে গঠিত চার সদস্যের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দলের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২ নভেম্বর প্রকাশিত হয় "হিউম্যানিটি আন্ডার অ্যাটাক ইন ত্রিপুরা #মুসলিম লাইভস ম্যাটার" শিরোনামে ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং রিপোর্ট। যে রিপোর্টে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে হিংসার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে এবং বলা হয়েছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সংঘটিত হিংসার পাল্টা হিসেবে অক্টোবরে ত্রিপুরায় সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক শক্তির দ্বারা এই আক্রমণ ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন