
২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস। রবিবার নয়াদিল্লির কর্তব্য পথে পালিত হতে চলেছে ৭৬ তম প্রজাতন্ত্র দিবস। ১৯৫০ সালে এই দিনেই ভারতের সংবিধান গৃহীত হয়েছিল। সেই স্মরণেই দেশজুড়ে উৎযাপিত হয় প্রজাতন্ত্র দিবস। জমকালো কুচকাওয়াজ, সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী এবং বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের সুসজ্জিত ট্যাবলোর প্রদর্শনী হবে কর্তব্য পথে।
কোন থিমে সেজে উঠছে ৭৬ তম প্রজাতন্ত্র দিবস? বিশেষ অতিথিই বা কারা? প্রজাতন্ত্র দিবসের ইতিহাসই বা কী? কোন কোন রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল অংশগ্রহণ করছে এবারে ট্যাবলোতে? তাদের থিমই বা কী? দেখে নিন এক নজরে...
প্রজাতন্ত্র দিবসের ইতিহাস –
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৪৭ সালের ৪ নভেম্বর সংবিধানের আনুষ্ঠানিক খসড়া পেশ করা হয় গণপরিষদে। এরপর ১৯৪৯ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতীয় সংবিধানে সেই খসড়া গৃহীত হয়। ১৯৫০ সালের ২৪ জানুয়ারি সেই সংবিধান চূড়ান্ত ভাবে গৃহীত হয়। এরপর ২৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়িত হয় ভারতের সংবিধান। এরপর থেকে এই দিনটি পালিত হয় প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে।
২৬ জানুয়ারি তারিখটিকেই সংবিধান বাস্তবায়নের দিন হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণ হল - ব্রিটিশ আমলে ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারিই ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস পূর্ণ স্বরাজের ঘোষণা করে। সেই দিনটিকেই স্মরণ করে ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি সংবিধান বাস্তবায়ন করা হয় এবং এই দিনটিকেই প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
১৯৫০ সালে নয়াদিল্লির আরউইন স্টেডিয়ামে প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবস পালিত হয়। বর্তমানে যা মেজর ধ্যানচাঁদ ন্যাশনাল স্টেডিয়াম হিসেবে পরিচিত। প্রথম অনুষ্ঠানে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর ১০০ টিরও বেশি বিমান এবং তিন হাজার কর্মী অংশ নিয়েছিলেন।
ট্যাবলো থিম –
৭৬ তম প্রজাতন্ত্র দিবসে থিম রাখা হয়েছে ‘স্বর্ণিম ভারত – বিরাসত ও বিকাশ’। অর্থাৎ এই বছর প্রজাতন্ত্র দিবসে দেশের ঐতিহ্য, বিকাশ ও অগ্রগতিকে তুলে ধরা হবে।
কোন কোন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল অংশ নিচ্ছে –
৭৬ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে ১৫ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল অংশ নেবে। অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, চণ্ডীগড়, দাদর নগর হাভেলি, দমন ও দিউ, গোয়া, গুজরাট, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব, ত্রিপুরা, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো ওই মহান দিনে কর্তব্যপথে উপস্থাপিত হবে। এছাড়া ১৫ টি মন্ত্রক ও বিভাগ কুচকাওয়াজের সময় তাদের ট্যাবলো প্রদর্শন করবে।
প্রধান কুচকাওয়াজটি রাষ্ট্রপতি ভবনের কাছে রাইসিনা হিল থেকে শুরু হয়ে, কর্তব্য পথ ধরে ইন্ডিয়া গেট ছাড়িয়ে লাল কেল্লা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
অতিথি হিসাবে কারা থাকছেন –
প্রতি বছর কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসাবে অন্য কোনও দেশের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি বা শাসককে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এবছর ৭৬ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে হাজির হতে চলেছেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি প্রবো সুবিয়ান্ত।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু প্রথমে দেশের জাতীয় পতাকা উন্মোচন করবেন। এরপর বন্দুক স্যালুটের মাধ্যমে শুরু হয় জাতীয় সঙ্গীত। ৫২ সেকেন্ড পর আবারও হয় গান ফায়ার। প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রতি বছর ১৯৪১ সালের কামান ব্যবহৃত হয়।
প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন ঘোষিত হয় বীরত্ব পুরস্কার। সেই সমস্ত শিশুদের সম্মান জানানো হয়, যারা অন্যের জীবন বাঁচাতে বা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী সাহসিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এছাড়া এই দিন পদ্ম পুরস্কারগুলি যথা পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ এবং পদ্মবিভূষণ সম্মান তুলে দেওয়া হয় প্রাপকদের হাতে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন