

রামমন্দির উদ্বোধনে আমন্ত্রণ পেলেও যোগ দেবেনা সিপিআইএম। মঙ্গলবার সিপিআইএম পলিটব্যুরো এক বিবৃতি দিয়ে একথা জানিয়েছে। সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেবার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
এদিন প্রকাশিত বিবৃতিতে সিপিআইএম পলিটব্যুরো জানায়, “সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন। সিপিআই(এম)-এর নীতি হল ধর্মীয় বিশ্বাসকে সম্মান জানানো এবং নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী প্রত্যেক ব্যক্তির তা অনুসরণ করার অধিকার রক্ষা করা। দল বিশ্বাস করে ধর্ম একজন মানুষের ব্যক্তিগত পছন্দ এবং রাজনৈতিক লাভের জন্য ধর্মকে হাতিয়ারে রূপান্তরিত করা উচিত নয়। তাই আমরা এই অনুষ্ঠানে যোগ দেব না।”
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এটা সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক যে বিজেপি এবং আরএসএস এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে রাষ্ট্রীয় স্পনসরড ইভেন্টে রূপান্তরিত করেছে। যাতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা জড়িত। সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা পুনর্ব্যক্ত করা ভারতে শাসনের একটি মৌলিক নীতি হল যে সংবিধানের অধীনে ভারতে কোনও ধর্মীয় অনুষঙ্গ থাকা উচিত নয়। এই অনুষ্ঠানের আয়োজনে যা শাসকগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে।”
এদিনই এক সংবাদসংস্থায় সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি জানান, "আমি এখনও পর্যন্ত কাউকে কিছু বলিনি। এক ভিএইচপি নেতা নৃপেন্দ্র মিশ্রকে সঙ্গে নিয়ে এসে আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন... ধর্ম প্রত্যেক ব্যক্তির ব্যক্তিগত পছন্দ। আমরা প্রত্যেক ব্যক্তির তাদের বিশ্বাসের বিশেষ ধরন বেছে নেওয়ার অধিকারকে সম্মান করি এবং রক্ষা করি...ভারতীয় সংবিধান এবং সুপ্রিম কোর্ট খুব স্পষ্টভাবে বলেছে যে রাষ্ট্র কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের অনুষঙ্গ স্বীকার করবে না বা রাষ্ট্রের কোনো ধর্মীয় অনুষঙ্গ থাকবে না। এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যা ঘটছে তা হল প্রধানমন্ত্রী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত অন্যান্যদের সাথে এটি একটি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রূপান্তরিত হয়েছে... এটি জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাসের সরাসরি রাজনীতিকরণ যা সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। অতএব, এই পরিস্থিতিতে, অনুষ্ঠানে যোগ দিতে না পেরে আমি দুঃখিত।"
এই প্রসঙ্গে সিপিআইএম পলিটব্যুরো নেত্রী বৃন্দা কারাত সংবাদসংস্থায় বলেন, "আমাদের দল অযোধ্যায় রাম মন্দিরের 'প্রাণ প্রতিষ্ঠা' অনুষ্ঠানে যোগ দেবে না... আমরা ধর্মীয় বিশ্বাসকে সম্মান করি, কিন্তু এখানে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে... এটাই এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানের রাজনীতিকরণ। এটা ঠিক নয়।"
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন