প্রতি মিনিট সংসদ চালাতে খরচ ২.৫ লক্ষ! বাদল অধিবেশন বারবার মুলতুবিতে প্রথম ৩ দিনেই ক্ষতি ২৩ কোটি টাকা

People's Reporter: ২০১২ সালে প্রাক্তন সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী পবন বনসালের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে, সংসদের এক মিনিট পরিচালনার খরচ প্রায় ২.৫ লক্ষ টাকা। যদিও এখন এই খরচ আরও বেড়েছে বলে অনুমান করা হয়।
লোকসভা
লোকসভাছবি - সংগৃহীত
Published on

সংসদে বাদল অধিবেশন (Monsoon Session 2025) ঘিরে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে অধিবেশ। বিরোধী ও সরকারি পক্ষের টানাপোড়েনের জেরে প্রথম তিন দিন একপ্রকার অচল অবস্থাতেই কেটেছে। আর এই অচলাবস্থার জন্য ক্ষতি হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। যেটা সাধারণ মানুষের করের টাকা। জানা যাচ্ছে তিনদিনে কমপক্ষে ২৩ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।

এই অচলাবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দুটি বিতর্কিত বিষয়। প্রথম বিষয়, বিহারে ভোটার তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ (Special Intensive Revision/SIR) নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ। বিরোধীরা জানান, সরকার এর মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভোটার তালিকা থেকে বিরোধী সমর্থকদের বাদ দিতে চাইছে।

দ্বিতীয় বিষয়, ‘অপারেশন সিঁদুর’। জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ভারতের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে সংসদে পূর্ণাঙ্গ আলোচনার দাবি উঠেছে।

এই দুটি ইস্যুতে বিরোধীরা জোরালো আলোচনার আহ্বান জানালেও, সরকারি পক্ষ তা এড়িয়ে যাচ্ছে। এই কারণে প্রতিদিনই কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।

২০১২ সালে প্রাক্তন সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী পবন বনসালের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে, সংসদের এক মিনিট পরিচালনার খরচ প্রায় ২.৫ লক্ষ টাকা। লোকসভায় ১.২৫ লক্ষ এবং রাজ্যসভার ১.২৫ লক্ষ টাকা। যদিও এখন এই খরচ আরও বেড়েছে বলে অনুমান করা হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে আপডেটেড পরিসংখ্যানের অভাবে এখনও সেই পুরনো হিসেবই ধরতে হচ্ছে।

প্রতিদিন সংসদের উভয় কক্ষে ছয় ঘণ্টা করে কার্যকাল ধরা হয় (দুপুরের বিরতির সময় বাদ দিয়ে)। সেই হিসেবে, তিন দিনে প্রতিটি কক্ষে মোট ১৮ ঘণ্টা বা ১,০৮০ মিনিট কাজ হওয়ার কথা ছিল। অথচ পিআরএস লেজিসলেটিভ রিসার্চ-এর তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যসভা মাত্র ৪.৪ ঘণ্টা (২৬৪ মিনিট) এবং লোকসভা মাত্র ৫৪ মিনিট কাজ করেছে। অর্থাৎ রাজ্যসভায় ৮১৬ মিনিট এবং লোকসভায় ১,০২৬ মিনিট কাজের সময় নষ্ট হয়েছে।

এই হিসাবে রাজ্যসভায় প্রায় ১০.২ কোটি এবং লোকসভায় প্রায় ১২.৮৩ কোটির আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২৩ কোটি টাকা।

মঙ্গলবার সংসদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, “বিরোধী দলের নেতারা সকলেই এখানে উপস্থিত আছেন। ব্যবসা উপদেষ্টা কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে আলোচনা হবে। কিন্তু, একাধিক বিষয় একসঙ্গে তোলার চেষ্টা করে, প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বিরোধীরা সংসদ অচল করে দিয়েছেন।”

বিরোধীদের পাল্টা দাবি, সরকার সচেতনভাবেই সংসদে আলোচনার পরিবেশ তৈরি করছে না। কংগ্রেস সাংসদ রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, “বিহারে ৫২ লক্ষ মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছি। এটা কি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা নয়? সরকার চাইছে সংসদ অচল রাখতে, যাতে প্রশ্নের মুখোমুখি না হতে হয়।”

লোকসভা
Anil Ambani: ৩০০০ কোটির জালিয়াতি! অনিল আম্বানির একাধিক সংস্থায় হানা ইডির, নজরে ইয়েস ব্যাঙ্কও
লোকসভা
Bihar: বিহারে ভোটার তালিকা থেকে বাদ ৫২ লক্ষ নাম! বিধানসভায় বিতর্কে জড়ালেন নীতিশ-তেজস্বী

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in