

২০ মাসেরও বেশি সময় ধরে বেতন জোটেনি HEC (Heavy Engineering Corporation)-এর প্রায় ৩ হাজার কর্মচারীর। পেটের দায়ে HEC-তে কাজ করার পাশাপাশি সেইসব কর্মীদের কেউ রাস্তার ধারে বিক্রি করছেন ইডলি, কেউ ফুটপাথে বসে পড়েছেন গামছা-অন্তর্বাস বিক্রি করতে। কেউ আবার পার্টটাইমে চালাচ্ছেন অটোরিক্সা। এমনটাই জানা গিয়েছে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’-এর একটি প্রতিবেদন থেকে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা HEC-এ কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার, সাধারণ কর্মী-সহ প্রায় ৩ হাজার কর্মচারী ২০ মাসেরও বেশি সময় ধরে তাঁদের প্রাপ্য বেতন থেকে বঞ্চিত। এমনকি চন্দ্রযান-৩ সহ ইসরোর মহাকাশ গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় একাধিক যন্ত্র তৈরি করেছেন ওই HEC ইঞ্জিনিয়াররা। কিন্তু তারপরেও দীর্ঘ দেড় বছর ধরে জমে থাকা বেতন মেলেনি। যতদিন যাচ্ছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। কর্মচারীরা সংসার চালাতে, ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ জোগাতে শেষ পর্যন্ত পরিচিত মহল থেকে ঋণও নিতে বাধ্য হয়েছেন। এককালে প্রাইভেট স্কুলে পড়ালেও বর্তমানে সন্তানদের সরকারি স্কুলে পাঠাতেও বাধ্য হয়েছেন কর্মীদের একাংশ।
সেরকমই এক HEC কর্মী, উমেশ নায়েক দফতরের কাজের পর পার্টটাইম অটোরিক্সা চালান। ‘দ্য হিন্দু’কে উমেশ জানিয়েছেন, “বিকেল ৫টা পর্যন্ত দফতরের (HEC) কাজ করে তারপর আমি অটোরিক্সা চালাই, যাতে আমার পরিবারকে রক্ষা করতে পারি। এইভাবে মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা রোজগার করি। কিন্তু আমি একা নই। HEC-এর অধিকাংশ কর্মীই বেতন না পেয়ে সংসার চালাতে বিভিন্ন পার্টটাইম কাজ করছেন। কেউ সবজি বিক্রি করছেন, কেউ কাজের পর রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে গোলগাপ্পা (ফুচকা) বিক্রি করছেন। দীর্ঘদিন ধরে বেতন বন্ধ রয়েছে। আর যত দিন যাচ্ছে, ততই সংযম হারাচ্ছি আমরা। এখনও আমরা আমাদের প্রাপ্য বেতন হাতে পাইনি।”
প্রসঙ্গত, বোকারো, ভিলাই, রউরকেল্লা, দুর্গাপুর, বিশাখাপত্তনম-সহ ভারতের প্রায় সমস্ত স্টিলপ্লান্টকে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ তৈরি করে সরবরাহ করে দেশের সবচেয়ে পুরনো পাবলিক সেক্টর ইউনিট HEC। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দেশ গঠনে সহায়তা করছে HEC। কিন্তু তা সত্ত্বেও সঠিক সময়ে কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার ব্যাপারে উদাসীন ওই সংস্থা। তবে কেন্দ্রীয় সরকার এই নিয়ে কিছুদিন আগেই সাফ জানিয়ে দিয়েছে, HEC কর্মীদের বেতনের সঙ্গে সরকারের কোনও যোগ নেই। কারণ, HEC একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন