সাংবাদিকদের পরিচিতিপত্র খারিজ করতে নতুন বিধি কেন্দ্রের, সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা!

ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্টস এবং ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অফ জার্নালিস্টস যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ কোনও সংবাদ পরিবেশন করলে আমলাতন্ত্র এই বিধি লাগু করতে পারে।
ছবি - প্রতীকী
ছবি - প্রতীকী

সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাই সাংবাদিকদের পরিচিতিপত্র খারিজ করে দেওয়ার জন্য নতুন বিধি আনা হয়েছে। এমনটাই অভিযোগ সাংবাদিকদের একাংশের। পিআইবি বা প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের কার্ড দেওয়া হয়। নতুন বিধিতে জানানো হয়েছে - জাতীয় নিরাপত্তা, আইনশৃংখলার পক্ষে ক্ষতিকর সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে, সেই অভিযোগে কার্ড বাতিল করা হবে।

এই ধরনের মোট দশটি বিধি 'সেন্ট্রাল মিডিয়া অ্যাক্রিডিটেশন গাইড লাইন ২০২২'-এ লাগু হয়েছে। এমনভাবে নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে যে, সরকার বিরোধী যে কোন খবর জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বিরোধী বলে দাগিয়ে দেওয়া যাবে। নতুন গাইডলাইনে কী বলা হয়েছে?

দেশের নিরাপত্তার সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা,বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, সম্ভ্রম, নৈতিকতার বিরুদ্ধে যায় বা আদালত অবমাননাকর, মানহানিকর ও অপরাধ প্ররোচনামূলক, এমন কোনও খবর সংবাদ কর্মী পরিবেশন করলে তাঁর কার্ড বাতিল বা সাসপেন্ড করা হবে। এই কার্ড কোনও সাংবাদিক যদি পেশা ছাড়া অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে কার্ড বাতিল করা হতে পারে। ওই সাংবাদিক বা তিনি যে সংস্থায় কাজ করেন, তারা যদি কোনও মিথ্যা, প্রতারণামূলক খবর পেশ করে, সেক্ষেত্রেও এই বিধি কার্যকর হবে।

কোনও সংবাদকর্মী যদি চাকরি ছেড়ে দেন, সেক্ষেত্রে সাতদিনের মধ্যে পিআইবিকে জানাতে হবে। সবদিক বিচার করে তার স্বীকৃতির প্রত্যাহার করা হতে পারে। অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদেরও অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়া হবে। তবে সেক্ষেত্রে একাধিক শর্ত চাপানো হয়েছে। যাঁরা অন্যের থেকে নেওয়া সংবাদ পরিবেশন করেন, তাঁদের এই কার্ড দেওয়া হবে না।

কেন্দ্রের তথ্যমন্ত্রক কেন্দ্রীয়ভাবে একটি কমিটি গঠন করছে, যারা এই ব্যাপারে নজরদারি চালাবে। পিআইবির প্রিন্সিপাল ডিরেক্টর জেনারেল এই কমিটির প্রধান হবেন। থাকবেন ২৫ জন সরকার মনোনীত সদস্য।

ছবি - প্রতীকী
স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিসর অত্যন্ত কম, সাংবাদিকদের জন্য ‘বিপজ্জনক’ দেশ ভারত - সমীক্ষা

দিল্লির ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্টস এবং ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অফ জার্নালিস্টস এই নির্দেশের কড়া সমালোচনা করে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, সরকারি নির্দেশিকা যেকোনওভাবে লাগু হতে পারে। সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ কোনও সংবাদ পরিবেশন করলে আমলাতন্ত্র এই বিধি লাগু করতে পারে।

সম্প্রতি বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ইউএপিএ অথবা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। নিছক টুইট করার জন্য তা করা হয়েছে। এই বিধি জরুরি অবস্থা শামিল। স্বাধীন চিন্তা ধারার হস্তক্ষেপ করা হয়েছে বলে অভিযোহ উঠেছে। এই নির্দেশিকা জারি করা হলে সরকার বিরোধী যে কোনও সংবাদের ক্ষেত্রেই পদক্ষেপ করা হতে পারে সরকারের তরফে, এমনটি আশঙ্কা করছে ওয়াকিবহাল মহল।

ছবি - প্রতীকী
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বকারী বিশ্ব নেতাদের পাশে ঠাঁই নরেন্দ্র মোদির: RSF রিপোর্ট

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in