Duttapukur Blast: শেষ ৯ বছরে রাজ্যে বিস্ফোরণে মৃত ৭০ জনেরও বেশি! দত্তপুকুর গেলেন সেলিম

সিপিআইএম-র দাবি, বাম আমলে বাজি কারখানাগুলিতে ৬ মাস অন্তর পুলিশি নজরদারি চলতো। এখন সেসব উঠে গেছে। ফলে মর্মান্তিক বিস্ফোরণ ঘটছে আর মারা যাচ্ছেন গরিব শ্রমজীবী মানুষ।
ঘটনাস্থলে মহম্মদ সেলিম
ঘটনাস্থলে মহম্মদ সেলিমছবি - সংগৃহীত
Published on

রবিবার সকালে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে দত্তপুকুর থানা এলাকার মোচপোল গ্রাম। এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন বহু। সোমবার সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সহ বাম নেতৃত্ব। সরকার ও প্রশাসনের গাফিলতির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

সেলিম বলেন, ‘‘এগরার বিস্ফোরণের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন চোখ খুলে গিয়েছে। আমরা তো দেখছি চোখে ঠুলিই পরা রয়েছে। যে কোনও ঘটনায় অন্যের ওপর দায় চাপাতে ব্যস্ত থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে এই কারখানা চলছিল কিভাবে? প্রশাসনের কাছে, পুলিশের কাছে, তৃণমূলের কাছে কোনও খবর ছিল না এটা হতে পারে? এই সবের দায় মুখ্যমন্ত্রীকেই নিতে হবে।’’

তিন মাস আগে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরাতেও এক বাজি কারখানার বিস্ফোরণে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। পরপর এই বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ একাধিক প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। বাজির আড়ালে কি বোমা তৈরি হতো? তাই নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। সিপিআইএম মুখপত্র 'গণশক্তি'র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৯ বছরে রাজ্যে বিস্ফোরণের জেরে প্রাণ হারিয়েছেন ৭০ জনেরও বেশি। নিহতদের মধ্যে শিশু থেকে মহিলা, বৃদ্ধ সকলেই রয়েছে। যার জন্য তৃণমূল সরকারকেই দায়ী করছে সিপিআইএম।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৩ সালে পাঁশকুড়ায় ৩ জন এবং বর্ধমানের কালনায় মৃত্যু হয়েছিল ২ জনের। ২০১৪ সালে বর্ধমানের ময়নাতে ৩ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৫ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলাতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১২ জন। ২০১৬ সালে বজবজে ২ জন এবং নীলগঞ্জে ১ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৭ সালে চম্পাহাটিতে ১ জন এবং আমডাঙায় ৫ জনের মৃত্যু হয়।

আবার ২০১৮ সালে হালিশহরে বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৩ জন। ২০১৯ সালে কাঁথিতে ২ জন, মগরাহাটে ৩ জন এবং কেশপুরে মারা যান ১ জন। ২০২০ সালে নৈহাটিতে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল ৫ জনের। ২০২১ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালিতে বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৩ জন। এছাড়া সম্প্রতি কয়েকটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ জন। পাঁশকুড়ায় ৩ জন, এগরাতে ১১ জন, মালদহে ২ জন এবং বজবজে ৩ জনের মৃত্যু হয়। আর রবিবার দত্তপুকুরে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ৮ জনের।

এত বিস্ফোরণের জন্য তৃণমূল সরকারকে দায়ী করেছে সিপিআইএম। সিপিআইএম-র দাবি, বাম আমলে বাজি কারখানাগুলিতে ৬ মাস অন্তর পুলিশি নজরদারি চলতো। বেআইনি কিছু পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের গ্রেফতারও করা হতো। কিন্তু তৃণমূলের আমলে সেই নজরদারিও উঠে গেছে। যার জন্য বাজি কারখানার আড়ালে বোমা তৈরির কাজ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম রবিবার টুইট করে বলেন, ‘‘রাজ্য সর্বনেশে বারুদের স্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে! এই দুর্নীতি-দুষ্কৃতী চক্রকে না ভাঙলে এরকমই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে আমাদের সভ্যতা। তৃণমূলী মুক্তাঞ্চল মানেই পুলিশের-প্রশাসনের নাকের ডগায় বেআইনি কাজ কারবার।’’

অন্যদিকে দত্তপুকুরের ঘটনায় সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে সিপিআইএম। তাদের বক্তব্য, মৃতদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে সরকারকে।

ঘটনাস্থলে মহম্মদ সেলিম
দত্তপুকুর বিস্ফোরণ-কাণ্ডে প্রথম গ্রেফতার, ধৃতের নাম শফিক আলি
ঘটনাস্থলে মহম্মদ সেলিম
ছোট ঘটনা, রাহুল গান্ধীও এটা নিয়ে টুইট করে দিল! - দাবি মুসলিম ছাত্রকে চড় মারতে বাধ্য করা শিক্ষিকার

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in