জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ৭ কিমি জঙ্গল পেরিয়ে স্কুলে যেতে হয়, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পড়ুয়াদের

People's Reporter: আগে স্কুলে যাতায়াতের জন্য বাস পরিষেবা চালু ছিল। কিন্তু গ্রামের রাস্তা অত্যন্ত খারাপ হয়ে যাওয়ায় তা বন্ধ হয়ে গেছে। তাই শিশুদের জীবনের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে জঙ্গল দিয়েই স্কুলে যেতে হয়।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ৭ কিমি জঙ্গল পেরিয়ে স্কুলে যেতে হয়, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পড়ুয়াদের
ছবি সংগৃহীত
Published on

ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে, বন্য প্রাণীর মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকি মাথায় নিয়েই প্রতিদিন প্রায় সাত কিলোমিটার পথ হেঁটে স্কুলে যাচ্ছে পড়ুয়ারা! গ্রামের রাস্তা খারাপ হওয়ায় এভাবেই প্রতিদিন স্কুলে যেতে বাধ্য হচ্ছে শিশুরা। অর্থাৎ যাওয়া-আসা মিলিয়ে প্রতিদিন ১৪ কিমি পথ পাড়ি দিচ্ছে তারা। কর্ণাটকের চামরাজনগর জেলার পচ্চেদোদ্দি গ্রামের ঘটনা।

এনডিটিভি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই পথটি মালে মহাদেশ্বর পাহাড়ের বনাঞ্চলের মধ্য দিয়ে গেছে। যেখানে বাঘ, হাতি এবং চিতাবাঘ সহ অন্যান্য হিংস্র বন্য প্রাণী রয়েছে। যার ফলে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন অভিভাবকরা। প্রায় ৫০ জন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া প্রতিদিন এই বিপজ্জনক পথ পাড়ি দেয়। দিনকয়েক আগেই এই জঙ্গলে একটি বাঘের মৃত্যু হয়েছে।

সম্প্রতি অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীরা সমগ্র বিষয়টি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে একটি চিঠি লিখেছেন। তারপরই শিরোনামে এসেছে এই খবর। পড়ুয়ারা যাতে নিরাপদে স্কুলে যাতায়াত করতে পারে, মুখ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অভিভাবকরা।

এর আগে শিক্ষার্থীরা তাদের স্কুলে যাওয়া-আসার একটি ভিডিয়োও রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তা প্রচার করেছিল। যদি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আসে সেই আকাঙ্খায়। যদিও তাদের সেই চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি।

অভিভাবকরা জানিয়েছেন, আগে স্কুলে যাতায়াতের জন্য বাস পরিষেবা চালু ছিল। কিন্তু গ্রামের রাস্তা অত্যন্ত খারাপ হয়ে যাওয়ায় সেই পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে শিশুদের জীবনের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে জঙ্গলের মধ্যে দিয়েই স্কুলে যেতে হয়। এছাড়া আর কোনও বিকল্প পথ নেই।

স্থানীয়রা আরও জানিয়েছেন, প্রথমে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বনবিভাগের পক্ষ থেকে একটি জিপের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

অভিভাবকদের অভিযোগ, বাস পরিষেবা পুনরায় চালু করার বা রাস্তা মেরামতের জন্য একাধিকবার আবেদন করা সত্ত্বেও, আধিকারিকরা কোনও পদক্ষেপ নেননি। কোনও পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায়, শিশুদের আবারও জঙ্গলের মধ্য দিয়ে প্রতিদিন বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে।

এক পড়ুয়া জানান, "মুখ্যমন্ত্রী বা স্থানীয় বিধায়ক কি আমাদের দুর্দশা দেখতে পাচ্ছেন না? আমরা তাঁদের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন করছি। তাঁদের উচিত একটি বাস বা জিপের ব্যবস্থা করা যাতে আমরা বন্য প্রাণীর মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকি ছাড়াই নিরাপদে স্কুলে যেতে পারি।"

গ্রামের আর এক ছাত্রী বলেন, "আমাদের অভিভাবকরা একাধিকবার কর্তৃপক্ষের নজরে এই বিষয়টি এনেছিলেন, কিন্তু তা বৃথা হয়। আমরা এখন মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি।"

বছরের পর বছর ধরে, বিভিন্ন মন্ত্রী, নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং শিক্ষা কর্মকর্তারা পচেদোদ্দি গ্রাম পরিদর্শন করেছেন এবং সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু রাস্তাঘাটের উন্নতি এবং নিয়মিত বাস পরিষেবার মতো দাবিগুলির এখনও কোনও স্থায়ী সুরাহা হয়নি।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ৭ কিমি জঙ্গল পেরিয়ে স্কুলে যেতে হয়, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পড়ুয়াদের
Labour Code: খর্ব হচ্ছে শ্রমিকদের স্বাধীনতা, বাড়ছে অস্থিরতা - শ্রমকোড বাতিলের দাবিতে পথে নামবে CITU

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in