

শ্রমকোড বাতিলের দাবিতে রাজ্য জুড়ে পথে নামতে চলেছে সিআইটিইউ (CITU)। চলতি মাসের ২২ তারিখ রাজ্য জুড়ে প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে, জনবহুল অঞ্চলে শ্রমকোড বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাবে সংগঠন। সিটু কার্যনির্বাহী কমিটির দু’দিনের বৈঠকের শেষে রবিবার একথা জানিয়েছেন রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল আলম।
রবিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে জিয়াউল আলম বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রমকোডের ফলে খর্ব হচ্ছে শ্রমিকদের স্বাধীনতা। দেশ জুড়ে শ্রমক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে এক অস্থির পরিস্থিতি। শ্রমিকদের কাজের পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে শ্রমকোড বাতিল করতে হবে।
শ্রমকোড সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, আগাম কোনোরকম প্রস্তুতি না নিয়েই কেন্দ্র ২৯ টি শ্রম আইন বাতিল করে দিয়েছে, ফলে শ্রমিক-মালিক সম্পর্কে অবনতি ঘটছে। শ্রমিকদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। তাই দ্রুত এই আইন ফিরিয়ে নিতে হবে। ফিরিয়ে দিতে হবে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার।
তিনি আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গে সামগ্রিকভাবে শিল্প, সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো নয়। রাজ্য জুড়ে এক অস্থিরতা, বিভাজন তৈরির চেষ্টা চলছে। এক টালমাটাল অবস্থা। এর ওপর সাম্প্রতিক এসআইআর'র জন্যও শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। কেন্দ্র এবং রাজ্যের দুই শাসক দল ধর্মকে কলঙ্কিত করে তাকে রাস্তায় নামিয়ে আনছে। কিন্তু যেসব ক্ষেত্রে সরকারের দায়বদ্ধ থাকা প্রয়োজন সেই বিষয়ে তারা উদাসীন।
সাধারণ সম্পাদক রাজ্যের চা বাগানগুলির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, রাজ্যের ৩৫০ চা বাগানের মধ্যে ১২ টি চা বাগান সম্পূর্ণ অচল, ৪৭ টির বেশি চা বাগানে শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া বন্ধ। শ্রমিকরা নিজেদের দাবি পূরণের জন্য বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। আর অন্যদিকে বাগানের মালিকরা জমি লুঠ করে, দখল করে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দিচ্ছে। রাজ্যের চা বাগানে এই লুঠতরাজের ফলে প্রায় ২ লক্ষ পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে।
তাঁর কথায় উঠে আসে চটকলের প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, চটকলগুলিও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যে কটা চালু আছে সেখানে শ্রমিকদের উপর বেপরোয়া শোষণ চালাচ্ছে মালিকরা। শ্রমিকরা শ্রমের মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারের শ্রম দপ্তরকে জানানো হলেও তারা আলোচনায় বসতে চাইছে না।
গিগ শ্রমিকদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গিগ শ্রমিকদের অধিকার মর্যাদা, সামাজিক নিরাপত্তার প্রশ্নে স্থায়ী বন্দোবস্ত করতে, এই বিষয়ে আইন প্রণয়ন করতে সরকার ব্যর্থ। শ্রমিক কর্মচারীদের স্বার্থরক্ষায় মালিকদের দায়বদ্ধ করার বিষয়ে সরকার সম্পূর্ণ উদাসীন, কোনও সময়োপযোগী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
জিয়াউল আলম বলেন, সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক কর্মচারীদের স্থায়ীকরণ করতে হবে এবং সম কাজে সম বেতন নিশ্চিত করতে হবে। এই বিষয়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য করতে হবে।
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে জিয়াউল আলম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিআইটিইউ রাজ্য সভাপতি অনাদি সাহু এবং সিটু নেতা সুমহান চক্রবর্তী।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন