আজ থেকে ঠিক পাঁচ বছর আগে আচমকাই ৪ ঘণ্টার ঘোষণায় হয়েছিলো নোটবাতিল। ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর রাত ৮টার সেই ঘোষণার পর ৫ বছর কেটে গেছে। যদিও সেই সময়ের ঘোষণা মত বিগত সময়ে কালো টাকা উদ্ধার বা সন্ত্রাসবাদ দমন জাতীয় কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি বলেই অভিমত সাধারণ মানুষের।
পাঁচ বছর আগের নোটবাতিলের আরও এক উদ্দেশ্য ছিলো। যেখানে বলা হয়েছিলো ডিজিটাল লেনদেনে উৎসাহ বাড়ানো। যদিও পাঁচ বছর পর দেখা যাচ্ছে ডিজিটাল লেনদেনের বদলে দেশের বড়ো অংশই আস্থা রেখেছে নগদ লেনদেনে। উলটে এই পাঁচ বছরে নগদ লেনদেন আরও বেড়েছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রকাশিত সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে, বিগত পাঁচ বছরে এই লেনদেন বেড়েছে। নোটবাতিলের ৪ দিনে আগে ৪ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে কারেন্সি নোটের মূল্য হিসেবে ১৭.৭৪ লক্ষ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিলো। যা ২৯ অক্টোবর ২০২১-এ দাঁড়িয়েছে ২৯.১৭ লক্ষ কোটি। অর্থাৎ বেড়েছে প্রায় ৬৪ শতাংশ। বাজারে ব্যাঙ্ক নোটের মূল্য এবং সঞ্চালন ২০২০-২১-এ বেড়েছে ১৬.৮ শতাংশ এবং ৭.২ শতাংশ। ২০১৯-২০তে যা ছিলো ১৪.৭ শতাংশ এবং ৬.৬ শতাংশ।
এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি সিএমএস ইনফোসিস্টেমের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার রাজীব কাউল জানিয়েছেন, ২০২০-২১ আর্থিক বছরে সিএমএস নেটওয়ার্ক সারা দেশে ৬৩ হাজার এটিএম-এর মাধ্যমে ৯.১৫ লক্ষ কোটি টাকার কারেন্সি নোট আদানপ্রদান করেছে।
প্রসঙ্গত, নোট বাতিলের পর জুলাই, ২০১৭ আরবিআই যে হিসেব দিয়েছিলো তাতে দেখা গেছে ৩০ জুন ২০১৭ পর্যন্ত ১৫.২৮ ট্রিলিয়ন নোট ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে। নোট বাতিলের আগে দেশে ১৫.৪৪ ট্রিলিয়ন নোট ছিলো। অর্থাৎ যে পরিমাণ নোট দেশে ছিলো তার প্রায় সবটাই ব্যাঙ্কের ঘরে ফিরে এসেছে। আর বি আই-এর তথ্য থেকেই জানা যায়, এপ্রিল ২০১৬ থেকে মার্চ ২০১৭ সময়কালে জাল নোট উদ্ধার হয়েছে ৫,৭৩,৮৯১টি। একইভাবে পূর্ববর্তী বছরে নোটবাতিল ছাড়াই দেশে ৪,০৪,৭৯৪ টি জাল নোট উদ্ধার হয়েছিলো।
২০১৬র ১৬ ডিসেম্বর লোকসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছিলেন, আয়কর দপ্তরের হিসেব অনুসারে দেশের মানুষের কালো টাকার মাত্র ৫ শতাংশ নোট আকারে আছে।
ওই সময় বিজেপির শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সংঘ নোট বাতিল পরবর্তী সময়ে জানিয়েছে – শুধুমাত্র নোট বাতিলের জেরে অসংগঠিত ক্ষেত্রে ২,৫০,০০০ ইউনিট বন্ধ হয়ে গেছে। খারাপ প্রভাব পড়েছে রিয়েল এস্টেটে। বহু শ্রমিককে কাজ হারাতে হয়েছে। একইভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে কৃষিক্ষেত্র।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।