নতুন তথ্যপ্রযুক্তি আইনকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলার বিচারপতির পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি অনুপ জয়রাম ভম্বানি। সোমবার তিনি মামলার শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। উল্লেখ্য, কেন্দ্রের নতুন তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বিরোধিতা করে মামলা করেছে দ্য ওয়্যার ও দ্য কুইন্ট দুই ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম।
এই আবেদনের ভিত্তিতে সোমবার শুনানির দিন ধার্য করা হলে বিচারপতি ভাম্বানি আইনজীবী নিত্য রামকৃষ্ণনকে বলেন, এই মামলা থেকে তিনি নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। সুতরাং তিনি যেন এই আবেদন অন্য বেঞ্চের সামনে পেশ করেন। নতুন তথ্যপ্রযুক্তি আইন নিয়ে নিজেদের মতামত জানানোর কথা বলেছিল কেন্দ্র। আবেদনকারীরা জানিয়েছেন, কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই কেন্দ্র একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। যা পরে বাড়িয়ে ২৬ জুন করা হয়।
এমনকী, এই আইন অমান্য করলে তার শাস্তি পেতে হবে বলেও কেন্দ্র হুঁশিয়ারি দিয়েছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রধান বিচারপতি ডি এন প্যাটেল ও জসমিত সিংয়ের ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রের কাছে থেকে এই বিষয়ে জানতে চেয়ে একটি একটি হলফনামা জারি করতে নোটিস পাঠায়। আবেদনকারীদের দাবি, বাইরে থেকে শক্তি খাটিয়ে ডিজিটাল নিউজ পোর্টালের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা সংবিধানের ১৪ এবং ১৯ নং ধারার লঙ্ঘনের সামিল।
নতুন তথ্যপ্রযুক্তি আইন রাষ্ট্রকে সংশ্লিষ্ট খবর ও পোর্টালের মতামতের উপর হস্তক্ষেপ করার জায়গা করে দেবে। সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে নিউজ পোর্টালকে এক করে ফেলা একেবারেই ঠিক নয় বলেও আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আবেদনকারীদের বক্তব্য, যেভাবে ডিজিটাল মিডিয়ার সংবাদে নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করা হচ্ছে তা ভারতীয় সংবিধানের ধারা ১৪ (সমতার অধিকার) এবং ধারা ১৯(১)(এ) (মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও অধিকার) লঙ্ঘন করছে।
আবেদনকারীদের আরও বক্তব্য – আইটি আইন ২০২১-এর মাধ্যমে রাষ্ট্র সংবাদমাধ্যমে প্রবেশ এবং নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চাইছে, যার মাধ্যমে খবর মুছে দেওয়া যাবে, ব্লক করা অথবা পরিবর্তন করা যাবে, সেন্সার করা যাবে, ক্ষমা চাওয়ানো যাবে ইত্যাদি। নতুন এই আইন দেশীয় আইন ব্যবস্থার পাশাপাশি এমন এক ব্যবস্থা তৈরি করতে চাইছে যাতে মতপ্রকাশের অধিকার এবং স্বাধীনতা দারুণ ভাবে ক্ষুণ্ণ হবে।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন এই আইনের বিরুদ্ধে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য টেলিগ্রাফ, দ্য হিন্দু, ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশন, মিডিয়ানামার প্রতিষ্ঠাতা নিখিল পাওয়া প্রমুখ প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সম্প্রতি দ্য হিন্দুতে এই বিষয়ে এক সম্পাদকীয় লেখা হয়েছে। যার শিরোনাম – ‘উলফ ইন ওয়াচডগ’স ক্লোথিং’ – অর্থাৎ প্রহরীর পোষাকে নেকড়ে। যেখানে নতুন এই আইনকে শিকারী বলে অভিহিত করা হয়েছে।
- দ্য লিফলেট-এর সৌজন্যে
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।