

রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল (UNHRC)-র বিশেষ প্রতিবেদক (Special Rapporteur) হিসাবে নিজের কর্মজীবন শুরু করলেন দলিত গবেষক অশ্বিনী কেপি (Ashwini KP)। প্রথম ভারতীয় হিসাবে তাঁর এই পথচলা যুব সমাজে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
জানা যাচ্ছে, ভারত এবং এশিয়া মহাদেশে বর্ণবাদ, বর্ণ বৈষম্য, জাতি বিদ্বেষ ও অসহিষ্ণুতা নিয়ে কোনও তথ্য পেলে তা রাষ্ট্রসংঘে জানানোর জন্য অফিসিয়ালি দায়িত্ব পেয়েছেন অশ্বিনী। তবে, এই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ বা প্রতিবেদন তিনি তৈরি করবেন স্বাধীনভাবে।
তিন বছরের জন্য তিনি নিয়োগ পেয়েছেন। আর, ১ নভেম্বর থেকে সেই কাজ তিনি শুরু করে দিয়েছেন।
বিশেষ প্রতিবেদকরা হলেন রাষ্ট্র সংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল (UNHRC) দ্বারা নিযুক্ত স্বাধীন বিশেষজ্ঞ। যারা ব্যক্তিগতভাবে একটি নির্দিষ্ট দেশের দৃষ্টিকোণ থেকে মানবাধিকারের উপর কাজ করার পাশাপাশি রিপোর্ট করে থাকেন।
HRC-এর প্রেসিডেন্ট ফেদেরিকো ভিলেগাসের (Federico Villegas) কাছে ৩ জনের নামের একটি তালিকা জমা দিয়েছিল প্রেসিডেন্টের পরামর্শদাতা গোষ্ঠী। সেই তালিকা থেকে অশ্বিনীকে বেছে নিয়েছেন HRC-র প্রেসিডেন্ট। গত ২১ অক্টোবর, কাউন্সিলের ৫১ তম অধিবেশনের শেষে তাঁকে (অশ্বিনীকে) নিযুক্ত করা হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, অশ্বিনী কেপি ছাড়াও ৩ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন ভারতের জোশুয়া ক্যাসেলিনো (Joshua Castellino) এবং বতসোয়ানা থেকে ইউনিটি ডাও (Unity Dow)।
কে এই অশ্বিনী?
এক প্রতিবেদনে দ্য কুইন্ট (The Quint) জানিয়েছে, কর্ণাটকের কোলার জেলার জন্ম গ্রহণ করেন অশ্বিনী কেপি। তারপর বিভিন্ন জেলার স্কুলে পড়ার পর বেঙ্গালুরুর মাউন্ট কারমেল কলেজ (Mount Carmel College) থেকে স্নাতক হন তিনি।
এরপর, বেঙ্গালুরুর সেন্ট জোসেফ কলেজ (St Joseph’s College) থেকে মাস্টার্স এবং দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (Jawaharlal Nehru University) থেকে এমফিল (MPhil) এবং পিএইচডি (PhD) সম্পন্ন করেন রাষ্ট্রসংঘের এই নয়া বিশেষ প্রতিবেদক।
এছাড়া, 'জারিয়া: উইমেনস অ্যালায়েন্স ফর ডিগনিটি অ্যান্ড ইকুয়ালিটি' (Zariya: Women’s Alliance for Dignity and Equality) নামে এক স্বচ্ছাসেবী সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা হলেন অশ্বিনী। এর আগে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের (mnesty International) সঙ্গেও কাজ করেছেন তিনি।
তাঁর কি বক্তব্য?
সংবাদ মাধ্যম দ্য লিফলেট (The Leaflet)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আমি আম্বেদকর পরিবার থেকে উঠে এসেছি। এই কারণে, আমি খুব অল্প বয়সে একাডেমিকের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলনে যোগ দিয়েছি।'
তিনি বলেন, 'আমি যাতে দলিত এবং প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে থাকতে পারি - তা নিশ্চিত করেছে আমার বাবা-মা। আর, এই উৎসাহ প্রগতিশীল আন্দোলনের উপর, বিশেষ করে আম্বেদকরবাদী দর্শন এবং জাতপাতবিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে আমার বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে বিশাল প্রভাব ফেলেছে।'
জানা যাচ্ছে, জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন ছাত্র আন্দোলন (Students Movement)-এ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন অশ্বিনী কেপি। JNU-তে ইউনাইটেড দলিত ছাত্র ফোরামের সদস্য ছিলেন তিনি।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন