

দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় সরকার 'আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের' আয়োজন করেছে। সেই কারণে দেশের সমস্ত ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলিকে তেরঙ্গা আলোয় সজ্জিত করা হয়েছে। ব্যতিক্রম আগ্রার তাজমহল। তেরঙ্গা আলোয় সজ্জিত করা হবে না পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি।
কারণ কী? এর পিছনে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশ। রাতের বেলায় তাজমহলে আলো জ্বালাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই কারণেই আজাদি কা অমৃত মহোৎসবে তেরাঙ্গা আলোয় সজ্জিত করা হয়নি তাজমহল।
কিন্তু মজার বিষয় হল, তাজমহল ছিল ভারতের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ যা এক বিশেষ উদযাপন উপলক্ষ্যে রাতে আলোকিত করা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে আগ্রা ট্যুরিস্ট ওয়েলফেয়ার চেম্বারের সেক্রেটারি বিশাল শর্মা জানান, আজ থেকে প্রায় ৭৭ বছর আগে যখন মিত্র শক্তির সামরিক বাহিনী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জয়লাভ করেছিল, তখন তাজমহল ফ্লাড লাইট দিয়ে আলোকিত করা হয়েছিল। পাশাপাশি স্মৃতিস্তম্ভের ভিতরে একটি দুর্দান্ত উদযাপন করা হয়েছিল।
তাজমহল আলোকিত না করার নির্দেশিকা প্রসঙ্গে সমাজকর্মী বিজয় উপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাজমহল শেষবার আলোকিত হয়েছিল ১৯৯৭ সালের ২০ মার্চ, বিখ্যাত পিয়ানোবাদক ইয়ানির শো চলাকালীন। ফ্লাডলাইটের আলো তাজমহলে একটি মহিমান্বিত পটভূমি তৈরি করেছিল। কিন্তু পরের দিন সকালে গোটা তাজমহল জুড়ে প্রচুর মৃত পোকামাকড় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। এরপর ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের রাসায়নিক শাখা সুপারিশ করে তাজমহলে রাতে আলো জ্বালানো উচিত নয়। কারণ, এর ফলে কীটপতঙ্গ স্মৃতিস্তম্ভের উপর দাগ ফেলে, যা তাজমহলের মার্বেলকে অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করে। সেই সময় থেকে তাজমহলে আলো জ্বালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, যা এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি। যদিও এখনকার দিনে আগের তুলনায় আরও উন্নত মানের আলোর ব্যবস্থা রয়েছে।
প্রবীণ সাংবাদিক রাজীব সাক্সেনা এই বিষয়ে জানান, ১৯৪২-১৯৪৬ সাল পর্যন্ত মিত্র দেশগুলি তাদের বিমানবাহিনীকে আগ্রায় সংগ্রহ করে রেখেছিল, খেরিয়া বিমানঘাঁটিকে তাদের স্টেজ গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করে। ১৯৩৭-৩৯ সালের মধ্যে টাটা কোম্পানি এই বিমানঘাঁটিতে একটি রানওয়ে তৈরী করে। যার উপর ৩/ডি এয়ার ডিপো গ্রুপ তৈরী হয়েছিল। ১০ মার্চ ১৯৪২ পর্যন্ত ১০তম বিমানবাহিনী আগ্রায় ছিল।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন