Adani Vs Hindenburg: আদানি গ্রুপের কর্মীরা বদলে দিয়েছেন সংস্থার তথ্য - চাঞ্চল্যকর দাবি উইকিপিডিয়ার

হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ-এর পক্ষ থেকে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলা হয়। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ-এর পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাতা নেট অ্যান্ড্যারসন ২১ ফেব্রুয়ারি তথ্যসহ এক ট্যুইট করেছেন।
গৌতম আদানি
গৌতম আদানিগ্রাফিক্স - নিজস্ব

এবার উইকিপিডিয়ার তথ্য বদলে দেবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠলো আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। এর আগে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ-এর পক্ষ থেকে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলা হয়। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ-এর পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাতা নেট অ্যান্ড্যারসন ২১ ফেব্রুয়ারি এই বিষয়ে তথ্যসহ এক ট্যুইট করেছেন।

উইকিপিডিয়ার পক্ষ থেকে সাইনপোস্টে এই বিষয়ে এক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সাইনপোস্টের ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, ৪০টির বেশি ‘শক পাপেট’ (Sockpuppet) বা অঘোষিত অর্থপ্রাপ্ত সম্পাদক আদানি পরিবার এবং তাদের ব্যবসা সম্পর্কিত ন’টি নিবন্ধ তৈরি করেছে বা সংশোধন করেছেন। এই সমস্ত অ্যাকাউন্ট পরে উইকিপিডিয়া বন্ধ বা নিষিদ্ধ করে দেয়। এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এঁদের অনেকেই আদানি সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি নিবন্ধ সম্পাদনা করেছে এবং আদানিদের পক্ষে বেশ কিছু কথা যোগ করেছেন।

সাইনপোস্টের বক্তব্য অনুসারে, এইধরনের একজন অর্থপ্রাপ্ত সম্পাদক একটি কোম্পানীর আইডি ব্যবহার করে সম্পূর্ণভাবে আদানি গ্রুপ সংক্রান্ত নিবন্ধটি নতুন করে লিখেছেন। সাইনপোস্টের আরও দাবি, এই সম্পাদনার সময় আদানি গোষ্ঠী সম্পর্কিত বেশ কিছু সতর্কবাণী মুছে ফেলা হয়েছে। যে ঘটনায় উইকিপিডিয়ার মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। যদিও সাইনপোস্টের এই গুরুতর অভিযোগ সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত আদানি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

সাইনপোস্ট জানিয়েছে, ২৫জন সম্পাদক আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির ওপর থাকা উইকি নিবন্ধ সম্পাদনা করেছেন। আদানি গ্রুপ সম্পর্কিত নিবন্ধ সম্পাদনা করেছে ২২ জন। সাইনপোস্ট যে ৯টি নিবন্ধ পরীক্ষা করে দেখেছে তার মধ্যে ৭টি নিবন্ধ সম্পাদনা করেছেন হ্যাচেনস নামক এক ব্যবহারকারী।

উইকিপিডিয়া জানিয়েছে, ২০০৭ সালে আদানি সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে শুরু করে। যা অতি "সহজবোধ্য শৈলীতে" লেখা হত। কিন্তু ২০১২ সালের মধ্যে তিনজন সম্পাদক, যাদের পরে শকপাপেট বা অঘোষিত অর্থপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসাবে নিষিদ্ধ করা হয়, তারা বেশ কিছু বিভাগে তথ্য সম্পাদনা করেছিলেন। এছাড়াও আদানি পরিবার সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্যও সম্পাদনা করা হয়। একজন ঘোষিত অর্থপ্রাপ্ত সম্পাদক একটি অন্য আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করে আদানি গ্রুপ সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ সম্পূর্ণ নতুন রূপে লিখে দেন। যদিও ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে নিবন্ধে বদল আনা হয়েছে তা উইকিপিডিয়া জানায়নি।

গত ২৪ জানুয়ারি হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকে আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন শেয়ারের দামে ধস নেমেছে। আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গ গোষ্ঠীর মূল অভিযোগ ছিল শেয়ারের দামে হেরফের এবং হিসেব জালিয়াতি। যদিও আদানি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশের আগে আদানী গোষ্ঠীর বাজারীকৃত মূলধন ছিল ২৩৮ বিলিয়ন ডলার। যা গত কয়েক দিনে ১২৫ বিলিয়ন ডলারেরর বেশি কমেছে। এই সময়েই আদানির নীট সম্পদের পরিমাণ কমেছে প্রায় ৪৯ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ধনীর স্থান থেকে নেমে এসে এখন তিনি ২৫ নম্বর স্থানে আছেন।

তবে আদানিই একা নন। উইকিপিডিয়া জানিয়েছে, এর আগেও বিলিয়নেয়ারদের মধ্যে অনেকেই উইকিপিডিয়াতে অঘোষিত অর্থের বিনিময়ে গোপন সম্পাদক নিয়োগ করে তথ্যের পরিবর্তন এনেছে। যার মধ্যে কেনেথ সি. গ্রিফিন (পে ওয়াল), রবার্ট টি. ব্রকম্যান, রবার্ট এফ. স্মিথ এবং বেশ কয়েকজন রাশিয়ান ব্যক্তি রয়েছেন৷ এলিজাবেথ হোমস, গ্রেগ লিন্ডবার্গ, জেফরি এপস্টেইন এবং পিটার নাইগার্ড সহ কয়েকজন প্রাক্তন বিলিয়নেয়ারও অঘোষিত ভাবে অর্থপ্রদানের মাধ্যমে সম্পাদনার জন্য নিয়োগ করেছিলেন বলে উইকিপিডিয়ার দাবি।

গত ২৪ জানুয়ারি আদানি এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেডের শেয়ারের দাম ছিল ৩,৪৪২ টাকা। বিগত ৩০ দিনে সেই শেয়ারের দাম পড়েছে ২০৪৪.৫০ টাকা। বুধবার একসময় এই শেয়ারের দাম ছিল ১,৩৯৭.৫০ টাকা।

বিগত ৩০ দিনে আদানী গ্রুপের দশটি শেয়ারে ক্ষতির পরিমাণ ১১.৫ লক্ষ কোটি টাকা প্রায়। মাত্র ১ মাসে আদানি গ্রুপের শেয়ারের দাম বাজারে পড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ।

আরও পড়ুন

গৌতম আদানি
Adani Scam: 'ছিলেন বিশ্বে ৬০৯তম ধনী, তারপর জাদু,' আদানি ইস্যুতে মোদীকেই নিশানা রাহুলের
গৌতম আদানি
Adani Scam: আদানি কাণ্ডে আজও উত্তাল সংসদ, তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভ বিরোধীদের

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in