
২০২০ সাল থেকে শেষ কয়েক বছরে বিশ্বের ৭৭%-র অঞ্চলের আবহাওয়া ক্রমশ শুষ্ক হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এই ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি UN Convention to Combat Desertification (UNCCD)-র এক প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
গত ৯ ডিসেম্বর সৌদি আরবের রিয়াধে UNCCD-র ষোড়শ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই বিশ্বের এই উদ্বেগজনক ছবি তুলে ধরা হয়েছে। ওই তথ্য অনুসারে, বিগত কয়েক বছরে বিশ্বজুড়ে শুষ্ক আবহাওয়া প্রায় ৪.৩ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার অঞ্চলে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ভারতের আয়তনের এক-তৃতীয়াংশের বেশি। বর্তমানে পৃথিবীর ৪০ শতাংশ ভূমি জুড়ে এই অঞ্চল বিস্তৃত।
সম্মেলনে আরও বলা হয়েছে, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে ব্যর্থ হলে এই শতাব্দীর শেষের দিকে আরও ৩ শতাংশ আর্দ্র আবহাওয়া অঞ্চল শুষ্ক আবহাওয়া অঞ্চলে পরিণত হতে পারে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ইউরোপের প্রায় ৯৬ শতাংশ অঞ্চল। এছাড়াও এর প্রভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্টের পশ্চিমাঞ্চল, ব্রাজিল, এশিয়া এবং মধ্য আফ্রিকায় শুষ্ক আবহাওয়া অঞ্চল বেড়ে যেতে পারে। শুষ্ক আবহাওয়া বৃদ্ধি পাওয়ার শতাংশের নিরিখে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দক্ষিণ সুদান এবং তানজানিয়া। অন্যদিকে আর্দ্র অঞ্চল থেকে শুষ্ক অঞ্চলে রূপান্তরের ঘটনার সবথেকে বেশি প্রভাব পড়েছে চীনে।
গত তিন দশকে শুষ্ক ভূমিতে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ২.৩ বিলিয়নে পৌঁছেছে। তথ্য অনুসারে, ২১০০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ৫ বিলিয়নে পৌঁছাতে পারে। সেক্ষেত্রে মানুষের বসবাসের ক্ষেত্রে এক কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
এশিয়া ও আফ্রিকার প্রায় অর্ধেক শুষ্ক আবহাওয়া অঞ্চলে মানুষের বাস। যার মধ্যে মিশর, ভারত, পাকিস্তান এবং চীনে শুষ্ক আবহাওয়া অঞ্চলে ঘন জনবসতি রয়েছে।
প্রতিবেদনে শুষ্কতা ও মরুকরণকে একটি স্থায়ী সংকট হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে এই ঘটনা জীববৈচিত্র্য ও মানুষের জীবিকার ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। UNCCD-এর নির্বাহী সচিব ইব্রাহিম থিয়াও বলেন, 'যখন একটি অঞ্চলের জলবায়ুতে শুষ্কতা বাড়তে থাকে তখন পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে যাওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ এর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে'।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন