

চ্যাটজিপিটির স্রষ্টা সংস্থা ওপেনএআই ইন্টারনেটের ক্ষতি করছে। এমনকি ইন্টারনেটের কপিরাইট আইনও ভাঙছে ওপেনএআই। এমনই অভিযোগ তুলেছিলেন ক্যালিফর্নিয়ায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত এআই গবেষক সুচির বালাজি। তিনি ওপেনএআই-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে ওই সংস্থা থেকে ইস্তফা সংস্থার বিরুদ্ধে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করেছে। এরপরেই গত ২৬ নভেম্বর স্যান ফ্রান্সিস্কোর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁর দেহ। তাঁর এই রহস্যমৃত্যু ঘিরে তৈরি হচ্ছে জল্পনা।
বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন চ্যাটজিপিটি। যা বাজারে এনেছিল ওপেনএআই সংস্থা। ২০১৫ সালে ইলন মাস্ক এবং স্যাম অল্টম্যান একসঙ্গে ওপেনএএই-এর প্রতিষ্ঠা করেন। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে ২৬ বছর বয়সী সুচির এই সংস্থায় যোগ দেন। ২০২৪ সালের আগষ্ট মাস পর্যন্ত সেখানে গবেষক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। এরপর সংস্থায় ইস্তফা দেন সুচির। তারপর সংস্থার বিরুদ্ধে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করেন। সুচিরের মূল অভিযোগ ছিল, ইন্টারনেটের কপিরাইট আইন ভাঙছে ওপেনএআই।
নিউ ইয়র্ক টাইমসে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সুচির বলেছিলেন, ‘আপনি যা বিশ্বাস করেন, তা যদি আমিও বিশ্বাস করি, আমাকে সংস্থা ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হবে’। ওপেনএআইয়ের কাজের পদ্ধতি নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন সুচির। তাঁর অভিযোগ ছিল, সংস্থার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন বিভিন্ন মডেলকে ভুল পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি কপিরাইট থাকা উপাদানে না বলে হস্তক্ষেপ করছে ওপেনএআই। সেই উপাদান ব্যবহার করে এআই মডেলগুলিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
তবে তাঁর অভিযোগগুলি মানতে চায়নি সংস্থা। ওপেনএআই বিবৃতি দিয়ে বলেছিল, ‘ইন্টারনেটে সর্বসাধারণের জন্য যে সমস্ত তথ্য মেলে, আমরা সেগুলি ব্যবহার করেই আমাদের এআই মডেল তৈরি করে থাকি। আইন সমর্থিত পদ্ধতিতেই আমরা কাজ করি। আমরা মনে করি, আমাদের এই নীতি নির্মাতাদের জন্য ন্যায্য, উদ্ভাবকদের জন্য প্রয়োজনীয় এবং আমেরিকার বাজারে প্রতিযোগিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ’।
২৬ নভেম্বর সুচিরের সান ফ্রান্সিস্কোর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁর দেহ। প্রাথমিকভাবে এই মৃত্যুকে আত্মহত্যাই মনে করছে সান ফ্রান্সিস্কো পুলিশ। এমনকি বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। এরপর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এটা কী সত্যি আত্মহত্যা? যদি আত্মহত্যা হয়, তাহলে কী এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যে তাঁকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অন্যদিকে, ২০১৮ সালে সংস্থা ছেড়ে দেয় ইলন মাস্ক। অল্টম্যান এবং মাস্কের বিরোধ বহুদিনের। সুচিরের মৃত্যুতে মাস্ক নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করে শুধুমাত্র লিখেছে ‘হুমম’।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন