ডিজিটাল পার্সোনাল ডাটা প্রোটেকশন (DPDP) অ্যাক্ট, ২০২৩-এর বিরুদ্ধে সরব হল দেশের বিরোধীদলগুলির মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’। বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়া মঞ্চের উদ্যোগে ১২০ জন সাংসদ এই বিষয়ে চিঠি লিখলেন কেন্দ্রীয় ইলেক্ট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে। যে চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী সহ ইন্ডিয়া মঞ্চের শরিক অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাংসদরাও।
কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, ডিএমকে, শিবসেনা (ইউবিটি), সিপিআইএম, আরজেডি সাংসদরা গতকাল এক বৈঠকে মিলিত হয়ে এই বিষয়ে সহমত হন। তাদের দাবি, ডিপিডিপি আইনের একটি নির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ তথ্যের অধিকার সংক্রান্ত আইন (আরটিআই)-কে গুরুত্বহীন করে দিচ্ছে। পরে এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, “আমরা, নিম্নস্বাক্ষরকারী সংসদ সদস্যরা, আপনাকে ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা (DPDP) আইন, ২০২৩ এর ধারা ৪৪(৩) বাতিল করার জন্য অনুরোধ করছি, যা তথ্য অধিকার (RTI) আইন, ২০০৫ সংশোধন করে। এই সংশোধনী, তথ্য অধিকার আইনের অধীনে জনগণের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবার ক্ষমতাকে ক্ষুণ্ণ করার একটি গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করে। বিশেষ করে, DPDP আইনের ধারা ৪৪(৩) দ্বারা প্রবর্তিত তথ্য অধিকার আইনের ধারা ৮(১)(জে)-র সংশোধনীতে সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।”
সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিআইএম সাংসদ জন ব্রিটাস বলেন, "এখানের অনেক বিধান ২০১৯ সালে যৌথ সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপন্থী। ইউপিএ শাসনকালে পাস হওয়া অনেক আইন, যেমন এমজিএনরেগা এবং আরটিআই, বর্তমান সরকার তা খাটো করে দেখছে।"
বৃহস্পতিবার প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়ায় সাংবাদিক সম্মেলনে আরজেডি মুখপাত্র নওল কিশোর বলেন, “আমরা এই আইনটি সম্পূর্ণরূপে সংশোধন করার চেষ্টা করব। সোশ্যাল মিডিয়া মিডিয়াকে গণতন্ত্রায়িত করেছে এবং দুর্বল অংশের মানুষজন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারকে জানানোর জন্য তা ব্যবহার করে। সরকার এই আইনের মাধ্যমে এই প্রচেষ্টাগুলির উপর একটি সম্মিলিত নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা করছে।”
নির্দিষ্ট যে ধারা নিয়ে বিরোধীদের পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়েছে তা হল ডিপিডিপি আইনের ৪৪(৩) অনুচ্ছেদ। বিরোধী সাংসদদের দাবি, ওই অনুচ্ছেদের কারণে আরটিআই-এর ৮(১)(জে) অনুচ্ছেদ গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে। যে অনুচ্ছেদে বলা ছিল, যদি কোনও তথ্যের সঙ্গে সাধারণ মানুষের স্বার্থ জড়িত না থাকে বা তা অন্যের গোপনীয়তাকে আঘাত না করে, সেক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা সেই তথ্য নাও প্রকাশ করতে পারে। যদিও ডিপিডিপি আইনে বলা হয়েছে, সরকারি সংস্থা যে কোনো তথ্য প্রকাশ নাও করতে পারে।
বিরোধীদের আরও অভিযোগ, এই আইন ২০২৩ সালে পাশ করা হলেও তা চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সকলের কাছে দেওয়া হয়েছে।
এদিনের বৈঠকে ছিলেন কংগ্রেসের গৌরব গগৈ, ডিএমকে-র এম এম আবদুল্লা, শিবসেনা (ইউবিটি)-র প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী, সিপিআইএম-এর জন ব্রিটাস, সমাজবাদী পার্টির জাভেদ আলি খান প্রমুখ নেতৃত্ব।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন