
চলতি বছর দুয়ারে সরকার ক্যাম্প আয়োজিত হয়নি একবারও। বছর শেষ হতে মাত্র ৫ দিন বাকি আর। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনও নির্দেশিকা এখনও জারি করা হয়নি। তাহলে কি দুয়ারে সরকারের চাহিদা ক্রমশ কমে আসছে?
চলতি বছরে দুয়ারে সরকারের নবম পর্ব আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বছর শেষ হতে চললো ক্যাম্প আর হয়নি। সূত্রের খবর, এই বছর আগস্ট মাসে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছিল সরকার। কিন্তু আর জি কর কাণ্ডের পর সেই শিবির হয়নি। সরকারি কর্মী ও আধিকারিকদের উপর ক্ষোভের আঁচ পড়তে পারে বলে অনুমান ছিল সরকারের।
২০২৩-র ডিসেম্বর মাসে শেষ দুয়ারে সরকার ক্যাম্প আয়োজিত হয়েছিল। তারপর থেকে আর শিবির হয়নি। প্রশাসন সূত্রে খবর, দুয়ারে সরকারে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, একশ দিনের কাজ, কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পগুলির চাহিদা বেশি। ক্রমশ সেই সমস্ত প্রকল্পে উপভোক্তার সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। যার জেরে দুয়ারে সরকারের চাহিদা কমে আসছে।
দুয়ারে সরকারের প্রথম পর্বে ৩২ হাজার ৮০০-র বেশি ক্যাম্প আয়োজিত হয়েছিল। যেখানে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করিয়েছিলেন ২ কোটি ৭৬ লক্ষ জনগণ। দ্বিতীয় পর্বে ১ লক্ষ ৪ হাজারের বেশি ক্যাম্পে প্রায় ৩ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ নাম নথিভুক্ত করেছিলেন। তৃতীয় পর্বে ৭৯ হাজারের অধিক ক্যাম্প হয়েছিল। যেখানে রেজিস্টার্ড জনগণের সংখ্যা ১ কোটি।
চতুর্থ পর্বে ৭২ হাজার ৮০০-র বেশি ক্যাম্পে ৬০ লক্ষের বেশি মানুষ নাম নথিভুক্ত করিয়েছিলেন। পঞ্চম পর্বে ৮২ হাজারের অধিক ক্যাম্প আয়োজিত হয়েছিল। যেখানে ৯০ লক্ষ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের নাম নথিভুক্ত হয়েছিল। ষষ্ঠ পর্বে ক্যাম্প হয়েছিল ৯৪ হাজারের বেশি। যেখানে ৬০ লক্ষ মানুষ নাম নথিভুক্ত করিয়েছিলেন। সপ্তম পর্বে প্রায় ১ লক্ষ ক্যাম্প আয়োজিত হয়। নাম নথিভুক্ত করান ৯০ লক্ষের বেশি উপভোক্তা। অষ্টম পর্বে ১ লক্ষ আড়াই হাজারের অধিক দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প আয়োজিত হয়েছিল। ওই ক্যাম্পগুলিতে মোট ৮০ লক্ষের বেশি জনগণ নাম নথিভুক্ত করেছিলেন।
২০২০ সালে ১ ডিসেম্বর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি দুয়ারে সরকার প্রকল্পের সূচনা করেন। এর অধীনে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে এবং পৌরসভার ওয়ার্ডগুলিতে একাধিক শিবির আয়োজিত হয়। দুয়ারে সরকার-র ক্যাম্প থেকে সাধারণ মানুষ একশ দিনের কাজ, লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্বাস্থ্য সাথী, জয় জোহার, তপশিলি বন্ধু, খাদ্য সাথী শিক্ষাশ্রী, ঐক্যশ্রী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, কৃষক বন্ধুর মতো বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের জন্য নাম নথিভুক্ত করতেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ, এমনকি মোদী সরকারও রাজ্যের এই প্রকল্পকে পুরস্কৃত করেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন