

গতবছর বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে রাজ্যের এনজিওগুলিকে ২৭ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সম্প্রতি CAG-এর প্রকাশিত এক রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়াও 'অন্যান্য' নামক কিছু সেক্টরের পেছনে আরও প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে সরকার। অর্থাৎ সবমিলিয়ে নির্বাচনের আগে রাজ্যের কোষাগার থেকে ৩৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
গত ২৫ মার্চ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ২০২০-২১ অর্থবর্ষের অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল বা CAG। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের কোষাগার থেকে এনজিওগুলিকে ২৭,০৪৮ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এবং 'অন্যান্য' বলে আরো কিছু ক্ষেত্রে ১০,৮৫৯ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।
এই বিপুল ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিএজি কর্তারা। তাঁদের প্রশ্ন, NGO অর্থাৎ নন-গভর্মেন্টাল অরগানাইজেশনের জন্য কেন এত টাকা খরচ করেছে সরকার, যে টাকার অডিট সরকার করতে পারবে না।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, "২০২০-২১ আর্থিক বর্ষে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার আয়ের প্রায় ২৬.২৪ শতাংশ এমন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা বাবদ দিয়েছে, যাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য কোনো যথার্থ ব্যবস্থাপনা নেই সরকারের। আবার এই ২৬.২৪ শতাংশের ৮০.৯০ শতাংশ গেছে বিভিন্ন এনজিও এবং অন্যান্যদের কাছে। যারা সরকারের কাছে দায়বদ্ধই নয়। যারা অডিটের আওতাতেই আসেনা। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।"
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এই টাকার অর্ধেকেরও কম টাকা পেয়েছে রাজ্যে পঞ্চায়েত এবং পৌরসভাগুলি। রিপোর্ট অনুযায়ী, পঞ্চায়েতগুলি পেয়েছে ১১,২৮৫ কোটি টাকা এবং কর্পোরেশন, পৌরসভাগুলিকে ৫,১৬৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের আওতাধীন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গুলি পেয়েছে মাত্র ১৭৯ কোটি টাকা। ৮,৪৪৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে।
রিপোর্টে গত পাঁচ বছরে এনজিওগুলোকে সহায়তা বাবদ কত টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার তারও উল্লেখ রয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৬-২১ অর্থবর্ষে এনজিওগুলোকে সরকারি কোষাগার থেকে মোট ১ লক্ষ ৬ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, এই এনজিওগুলোর অধিকাংশই শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের নামে রয়েছে।
CAG-এর এই রিপোর্ট দেখে বিস্মিত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত। তিনি এই এনজিওগুলোর নাম এবং এনজিও কর্তৃক কী উন্নতি হয়েছে, তা প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন