Coochbehar: শাসকদলের অত্যাচারে রাতারাতি ‘আশ্রয়হীন’ ৫ হাজার মানুষ, পালিয়ে ঠাঁই আসাম ও বাংলাদেশে

দক্ষিণ বালাভূত ও চরবালাভূত এলাকায় প্রায় ৫০টি ভাঙচুর ও লুঠপাট চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। যার ফলে বাধ্য হয়ে গ্রাম ছেড়ে আসাম ও বাংলাদেশে গিয়ে ঠাঁই নিতে হয়েছে কয়েকশো পরিবারকে।
অসমের ছত্রশালে আশ্রয় নেওয়া পরিবার
অসমের ছত্রশালে আশ্রয় নেওয়া পরিবারছবি সংগৃহীত

পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের অত্যাচারে রাতারাতি আশ্রয় হারালেন কোচবিহারের বালাভূতের ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। ঘরছাড়াদের একাংশ আশ্রয় নিয়েছেন আসামে, বাকিরা প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে ছুটেছেন বাংলাদেশের ভুরুঙ্গামারিতে। আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকাংশই গুরুতর আহত। একদিকে যেমন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ তাদের আশ্রয় দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন অন্যদিকে তেমন আসামের ছত্রশাল, বটেরহাট, আগমনী ভালাকুড়া এলাকায় আশ্রয়প্রার্থীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও খাবারের সব ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছেন ওই এলাকার কংগ্রেস বিধায়ক আব্দুল সোভান সরকার ও ওই এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট এসাহাত আলি।

শনিবার রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন চলাকালীন তুফানগঞ্জ মহকুমার বালাভূত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সকাল থেকেই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ব্যাপক সন্ত্রাস ছড়িয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দক্ষিণ বালাভূত ও চরবালাভূত এলাকায় প্রায় ৫০টি ভাঙচুর ও লুঠপাট চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। যার ফলে বাধ্য হয়ে গ্রাম ছেড়ে আসাম ও বাংলাদেশে গিয়ে ঠাঁই নিতে হয়েছে কয়েকশো পরিবারকে। কোচবিহারের সিপিআইএম জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় জানিয়েছেন, বালাভূতের ওই মানুষগুলোর শুধুমাত্র এইটুকুই অপরাধ যে তারা সকলেই সিপিআইএম করেন আর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাম প্রার্থীকে জেতাতে চেয়েছিলেন।

তিনি আরও জানিয়েছেন, “পঞ্চায়েত ভোটে গণতন্ত্র রক্ষা করতে গিয়ে যারা দলের জন্য আহত হয়েছেন, দল তাদের পাশে থাকবে।” রবিবার সকালেই কোচবিহারের সিপিআইএম নেতা তমসের আলি, পূর্ণেশ্বর অধিকারী, অসীম সাহা-সহ সিপিআইএমের জেলা নেতৃত্বের একটি দল আসামে গিয়ে ঘরছাড়া বালাভূতবাসীদের সঙ্গে দেখা করেন এবং সবরকমভাবে তাদের পাশে থাকার কথা দেন। এই বিষয়ে আসামের সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বাম নেতা তমসের আলির মতে, তৃণমূলের ‘হার্মাদ’ বাহিনীর ভয়ে আসামে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বালাভূতের প্রায় ১১৪০টি পরিবার। অন্যদিকে, সীমান্ত পেরিয়ে পড়শি দেশে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১২০টি পরিবারের মানুষ।

শুধুমাত্র সাধারণ মানুষই নন, ঘরছাড়াদের মধ্যে রয়েছেন সিপিআইএমের দুই প্রার্থী ফয়েজউদ্দিন মিয়াঁ ও নূর মহম্মদ। তাদের বক্তব্য, এবার প্রথম থেকেই শাসকদল বুঝতে পেরেছিল যে বালাভূত গ্রাম পঞ্চায়েত তাদের হাত থেকে বেরিয়ে যাবে। তাই ভোট ঘোষণার পর থেকেই এলাকায় সন্ত্রাস শুরু করে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। শনিবার সকাল থেকেই ওই অঞ্চলের প্রায় সমস্ত বুথের সামনে ব্যারিকেড করে বাম প্রার্থীদের ঢুকতে বাধা দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। তারপর ছাপ্পা ভোট দিয়ে সকাল ৯টার মধ্যেই নির্বাচন শেষ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বাংলাদেশ ও আসাম থেকে ভাড়া করা গুণ্ডাও ছিল বলে জানা গিয়েছে।  

অসমের ছত্রশালে আশ্রয় নেওয়া পরিবার
WB Panchayat Polls: ভোটের পরই ভাঙচুর আনিস খানের আত্মীয়ের বাড়ি, অভিযুক্ত তৃণমূল!

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in