
বীরভূমের সাঁইথিয়ার পর এবার দক্ষিণ ২৪ পরগণার বজবজ। ভোটের আগেই একের পর এক পুরসভা দখলে নিচ্ছে শাসকদল। বজবজ পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টিই বিরোধী শূন্য। ফলে ভোটের আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেল তৃণমূল।
২৭ ফেব্রুয়ারি ১০৮টি পুরসভায় ভোট। আজ মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। কিন্তু ১২টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। বাকি আটটির মধ্যে আটটিতেই প্রার্থী দিয়েছে সিপিআইএম। বিজেপি দিয়েছে ২টিতে এবং কংগ্রেস ৩টিতে প্রার্থী দিয়েছে।
সিপিআইএমের অভিযোগ, শাসকদলের অত্যাচারে মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি তাদের প্রার্থীরা। দলের তরফ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের ১২ জন প্রার্থীর বাড়ি ঘিরে রেখেছিল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তাঁরা বাড়ির বাইরে বেরোতেই পারেনি। যে আটজন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাঁরা বহু বাধা টপকে, হুমকি উপেক্ষা করে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
সিপিআইএম দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ী জানিয়েছে, বিরোধীরা যাতে মনোনয়ন জমা দিতে না পারেন, তার জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এলাকায় সশস্ত্র দুষ্কৃতি ঢোকাতে শুরু করে শাসকদল। বামফ্রন্ট কর্মী-প্রার্থীদের হুমকি দেওয়া শুরু করে।
ভোটের আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় প্রসঙ্গে বজবজ বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেসের অবজারভার জাহাঙ্গীর খান সাংবাদিকদের বলেন, "বাকি যে আটটিতে প্রার্থী দিয়েছে বিরোধীরা, ভোটের আগে তাঁরাও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে শামিল হয়ে প্রার্থীপদ তুলে নেবে বলে আমাদের বিশ্বাস।"
বজবজ বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক অশোক দেব সাংবাদিকদের জানান, বিরোধীরা যাই বলুক, আসল কথা হলো তাঁরা প্রার্থী দেওয়ার মতো লোক খুঁজেই পায়নি। আগামী দিনে আমরা সবাইকে নিয়েই উন্নয়নের শামিল হবো এটা আমাদের বিশ্বাস।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ডায়মন্ড হারবার সংসদীয় এলাকায় ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ৭২টি গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ১০৮১টি আসন, পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন ২০৮, জিলা পরিষদের মোট ২০টি আসনের বেশিরভাগই গায়ের জোরে দখল করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই ৭২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬৮টি তে কোনও টিএমসি বিরোধী প্রার্থী ছিল না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিএমসি জিতেছিল ১০০৬টি গ্রামসভা, ১৯৭টি সমিতি এবং ২০টি জিলা পরিষদের আসন। তারই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে ডায়মন্ড হারবার লোকসভার অন্তর্গত বজবজ পৌরসভায়, অভিযোগ সিপিআইএমের।
অন্যদিকে, বীরভূমের সাঁইথিয়ায় ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ড বিরোধী শূন্য। বাকি তিনটি ওয়ার্ডে প্রার্থী কেবল বামফ্রন্ট। কংগ্রেস বা বিজেপি প্রার্থী দিতে পারেনি কোনো ওয়ার্ডে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন